ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজমের আদালত একটি হত্যা মামলায় পাঁচজনের অপর মামলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবু উবায়দা একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
প্রথম মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নাসিরনগরের খান্দুরা গ্রামের খাদেম আলী, জহিরুল ইসলাম (পলাতক), আলী আহাদ, গেসু মিয়া ও কুদ্দুস মিয়া। যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের বিজ্ঞ আদালত ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এ মামলার অপর আট আসামির পাঁচজনকে পাঁচ বছরের করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। পাঁচ বছর দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন খান্দুরা গ্রামের জামাল মিয়া, ছোয়াবা মিয়া, আরজু মিয়া কসাই, লোকমান মিয়া (পলাতক) ও আছমান মিয়া। মামলার বাকি তিন আসামি বজরু মিয়া, ইদ্রিস মিয়া ও জাহাঙ্গীর মিয়াকে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, এক হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।
২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল সকাল ১১টায় খান্দুরার সালাম বাজারের কাছে মামলার আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবদুল করিমকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করলে তাকে প্রথমে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে প্রাথমিক চিকিৎসাশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। এ ঘটনায় নিহত আবদুল করিমের চাচা হাজি আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে ২১ জনকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় ২০ এপ্রিল মামলা করেন। পরে পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন বিজ্ঞ ভারপ্রাপ্ত পিপি দ্বীন ইসলাম। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবিদ উল্লাহ।
এদিকে আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবু উবায়দা আখাউড়া উপজেলার বনগজ গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (২০) হত্যা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। এ সময় পাঁচজনের এক বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়। মামলায় ৪৬ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামির নাম বাবুল মিয়া (৫৪)। এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ খাঁ, আবু হানিফ, দুলাল মিয়া ও হাসান মিয়া। তাঁদের বাড়ি বনগজ গ্রামে। রায় ঘোষণার সময় মামলার ৫৩ আসামির মধ্যে ৩০ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ২৩ আসামির মধ্যে একজন মারা গেছেন এবং ২২ জন পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন দা দিয়ে কুপিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর জখম করে। পরের দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেলোয়ারের চাচা মনির মিয়া বাদী হয়ে আখাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মুজিবুর রহমান ভুইয়া আর আসামি পক্ষে আইনজীবী জসিম উদ্দিন খাঁ এ মামলা পরিচালনা করেন।