মামার জোরে পদহীন ভাগ্নে হতে চান নৌকার মাঝি
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মামার জোরে পদহীন ভাগ্নে হতে চান নৌকার মাঝি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান হোসেনের ভাগ্নে তিনি। তার নাম হেদায়েতুল হক। তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পরিচয়ে দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পাঠানো মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এই চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মধু।
লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। গত নির্বাচনে তাকে তার মামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন ও বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বাকি বিল্লাহ (বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান) প্রভাব খাটিয়ে নৌকা পাইয়ে দেন। এরপর এবারের নির্বাচনে এই ইউনিয়নে মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচজনের নাম গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পাঠায় উপজেলা আওয়ামী লীগ। এই তালিকায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মধু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান বাদশা ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মজনুর রহমান। কিন্তু হেদায়েতুল হক দলীয় কোনো পদে না থাকলেও কৌশলে তার মামা কেন্দ্রে পাঠানো তালিকায় দলীয় পরিচয়ের স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য লিখে দেন।
পরে বিষয়টি জানতে পেরে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন বারের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম মধু গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় কমিটির মনোনয়ন বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো তালিকা, লিখিত অভিযোগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির তালিকা প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
এদিকে পাঠানো তালিকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর থাকলেও তাদের কাছে বিষয়টি লুকানো হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন।
পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহির উদ্দিন বলেন, ‘তালিকায় হেদায়েতুল হককে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য করা হয়েছে কি না, আমাদের তা জানানো হয়নি। এমনকি তালিকার ভেতরের অংশ আমাদের পড়তে দেওয়া হয়নি।’
অভিযোগের বিষয়ে সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, ‘গতবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর হেদায়েতুল হক পদাধিকার বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কো-অপ্ট সদস্য হয়েছেন। কিন্তু ভুলবশত বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, ‘চেয়ারম্যান হলেও পদাধিকার বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া করে জেলা কমিটির মাধ্যমে পাস করে নিতে হয়।’