শরীয়তপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা
শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপির) নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এ সময় হামলায় আট জন আহত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। তুলাসার ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উপরগাঁও হাছেন দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে আজ বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণের আগে সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, দুই সদস্য প্রার্থীর বাড়িসহ আটটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল হোসাইনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।
এদিকে, হামলার সময় কেন্দ্রের পাশ থেকে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালমান হাবীবও আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দাবি করা হচ্ছে, সদর উপজেলার তুলাসার ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসাইন। আর মনোনয়ন না পেয়ে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে জামাল হোসাইনের সমর্থকেরা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উপরগাঁও হাছেন দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ান ও মান্নান দেওয়ানের বাড়িতে হামলা চালান। হামলায় বাড়ির আট সদস্য আহত হয়েছেন। আহত আট জন হলেন—সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ানের স্ত্রী শারমিন আক্তার, কুলসুম বেগম, আকাশি, পারু বেগম, মোকলেস ব্যাপারি, ইদ্রিস ব্যাপারি, আমেনা বেগম ও খতেজা বেগম। তাঁদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ সময় আটটি বসত ঘর ও দুটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। এ সময় সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ান, তাঁর চাচাত ভাই আমীর হোসেন দেওয়ানের ঘর ও সদস্য প্রার্থী মান্নান দেওয়ানের দোকান লুট করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ান দাবি করেন, ‘আমি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য। আবার প্রার্থী হয়েছি। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহিদুল ইসলামকে সমর্থন করার কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ভোটের দিন যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারি, সেজন্য আমার ও পরিবারের আটটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। খবর দেওয়ার পরও পুলিশ আসছিল না। দেড় ঘণ্টা হামলা চালানোর পর র্যা ব ও পুলিশ এসেছে। ততক্ষণে আমাদের সব শেষ। আমার ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটারেরা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারেন, সে জন্য নৌকার প্রার্থী জামাল হোসাইনের লোকজন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে।
সদস্য প্রার্থী মান্নান দেওয়ান বলেন, ‘নৌকার সমর্থকেরা আমার দোকান ভাঙচুর করে এক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল হোসাইন বলেন, ‘সকালে জাহিদুল ইসলামের সমর্থকেরা আমার এক কর্মীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমার সমর্থকদের শান্ত থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে দুপক্ষই উত্তেজনা ছড়ায়।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভোটারেরা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারেন, সেজন্য হামলা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে জানালেও তারা সহযোগিতা করছে না।’
সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রের পাশের সদস্য প্রার্থীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে—এমন খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে যাই। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য যাঁরা ছিলেন তাঁরা কেন্দ্র রক্ষা করেছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। আর ওই হামলার ঘটনায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’