বান্দরবানে ৪ হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি
বান্দরবানে একসঙ্গে চারজনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন নূর বাহার নামের এক আসামি। আজ রোববার বিকেলে বান্দরবানের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে আজ রোববার দুপুরে ওই হত্যা মামলার আসামি আবদুল মোনাফের স্ত্রী আরেফা বেগমকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে সদর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন।
গ্রেপ্তার হওয়া নূর বাহার নিহত মোহাম্মদ আমিনের (৪০) তৃতীয় স্ত্রী নূর নাহারের বড় বোন। পুলিশ শুরুতে নূর নাহারকে আজ গ্রেপ্তারের কথা জানালেও পরে জানায়, নূর নাহার নয়, তাঁর বড় বোন নূর বাহারকে শনিবার চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নূর বাহার হত্যা মামলার পাঁচ নম্বর আসামি।
নিহত আমিন বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের ক্যায়ামলং এলাকায় আবদুল মোতালেব নামের এক ব্যক্তির বাগানবাড়িতে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার ওই বাগানবাড়িতে আমিন, তাঁর ছেলে জুনায়েদ (১২), বড় বোন বেগম বাহার (৪৫) ও তাঁর ছেলে ইলিয়াছকে (৫) জবাই করে হত্যা করা হয়। পরদিন শুক্রবার সকালে চারজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিরা রোহিঙ্গা বলে দাবি করে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে নিহত বেগম বাহারের ছেলে শফি আলম সদর থানায় নূর নাহার, তাঁর ভাই আবদুল মোনাফ, নূরুল আমীন ও আবদুর শুক্কুর, বড় বোন নূর বাহারসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, নিহত মোহাম্মদ আমিন বিভিন্ন সময়ে তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর মতো তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর বনিবনা হতো না। স্ত্রীর ভরণ-পোষণ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকদের সঙ্গে নিহত আমিনের বাকবিতণ্ডা ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে। কিছুদিন আগে ঝগড়া চলাকালে আমিনের দায়ের কোপে শ্বশুরের একটি আঙুল কেটে যায় এবং স্ত্রীর হাতেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। তৃতীয় স্ত্রীর ছোট্ট শিশু দুলুকে নিজের কাছে জোর করে রেখে দেন।
ওসি জানান, ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরেই এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তৃতীয় স্ত্রীসহ তাঁর ভাইয়েরা। নূর বাহার পুলিশ ও আদালতের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
হত্যা মামলার বাদী শফি আলম বলেন, ‘আমার মামার তৃতীয় স্ত্রী নূর নাহার, তাঁর ভাই আবদুল মোনাফ, নূরুল আমীন ও আবদুর শুক্কুর এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের আগের দিনও ঘটনাস্থল ক্যায়ামলং এলাকায় হত্যাকারীদের ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন স্থানীয় লোকজন।’