সরকার চাইলে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
সরকার চাইলে মানবতাবিরোধী অপরাধে কিশোরগঞ্জের হাসান আলীর মৃত্যুদণ্ড গুলি করে কার্যকর করতে পারবে। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ঘোষণা করা রায়ে এ কথা বলা হয়েছে। তবে সরকার চাইলে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়েও রায় কার্যকর করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
urgentPhoto
হাসান আলীর বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়। তিনটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং দুটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। হাসান আলী বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
হাসানের বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে খালাস; ২, ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এর মধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ২, ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার দায়ে হাসান আলীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায় শেষে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘একাত্তরে হত্যা ও গণহত্যা দুটিতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরে সরকার গুলি করে, নয়তো ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করতে পারবে। আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।’
অন্যদিকে, রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস শকুর খান সাংবাদিকদের বলেন, হাসান আলীর বাবা মোসলেহ উদ্দিনের অপরাধের শাস্তি তাঁকে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আনীত অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনার সময় হাসান আলী উপস্থিত ছিলেন না। পিতার অপরাধের শাস্তি পুত্রকে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। একই বছরের ২২ আগস্ট আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করে প্রসিকিউশন। এর পর ওই বছরেরই ৭ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়, চলতি বছর ৩০ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়।
হাসান আলীর বিরুদ্ধে মোট তিনটি হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, নির্যাতন, দুটি গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। গত ২০ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিল।