ওসিকে তিন পুলিশসহ আসতে বলেছেন আদালত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আহত এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়া পরানোর ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আরো তিন পুলিশ সদস্যসহ ফের হাজির হতে বলেছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ চার পুলিশ সদস্যকে আগামী ৫ জুন হাজির হওয়ার আদেশ দেন।
আগের নির্দেশ অনুযায়ী আশুলিয়া থানার ওসি আজ আদালতে হাজির হয়ে জানান, ওই ঘটনার দিন একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও দুজন কনস্টেবল হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর আদালত সবাইকে ৫ জুন হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২৯ মে আশুলিয়া থানার ওসিকে তলব করেন হাইকোর্ট। ৩১ মে সকাল সাড়ে ১০টায় হাইকোর্টে হাজির হয়ে ওসিকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
গত ২৬ মে ভোর ৫টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী হলের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার হন ৪২ শিক্ষার্থী। আহত হন অনেকে। পরে অবশ্য ৪২ শিক্ষার্থীর জামিনও হয়।
এদিকে আহত এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে সোমবার একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘হ্যান্ডক্যাপড টু হসপিটাল বেড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন আহত হওয়ার পর তাঁর বন্ধুরা তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে হাসপাতালের বেডের সঙ্গে তাঁর এক হাতে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছে। খাওয়ার সময় হ্যান্ডকাফ খুলে দিতে অনুরোধ করলেও পুলিশ তা খুলে দেয়নি।’
এ প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
পরে রেজাউল করিম বলেন, প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে তলব করেছেন। পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন। রুলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়া পরানো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। রুলে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকার পুলিশ সুপার ও আশুলিয়া থানার ওসিকে তলব বিবাদী করা হয়।