ব্যাংক কর্মকর্তাকে নির্যাতন, অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের
সাবেক সংবাদকর্মী ও বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি চাহিদামতো অর্থ না দিলে ক্রসফায়ার করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও জানা গেছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পাওয়া ওই কর্মকর্তার নাম গোলাম রাব্বী। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত। এর আগে তিনি সংবাদভিত্তিক একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ পাঠক এবং বার্তাকক্ষ সম্পাদক হিসেবে কাজ করতেন।
কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলকে রাব্বী জানান, গতকাল রাতে তাজমহল রোডের একটি এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে বের হওয়ার পর কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর পথরোধ করে। এর পর তারা তাঁকে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুলিশভ্যানে তোলে। সেখানে তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাসুদ। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ও পরিচয় জানার পর একপর্যায়ে রাব্বীকে বেড়িবাঁধে নিয়ে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
গোলাম রাব্বীর বর্তমান অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর বন্ধু জাহিদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, রাব্বী শারীরিকভাবে এখন কিছুটা সুস্থ হলেও পুলিশের করা অপমানে সে মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েছে। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে আসা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে জাহিদ বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে গোলাম রাব্বীকে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড থেকে তুলে নিয়ে যায় টহল পুলিশের একটি দল। পরে রাত ১২টা ৬ মিনিটে রাব্বী তাঁকে ফোন করেন। সে সময় তিনি বলেন, ‘ঝামেলার মধ্যে আছি, আসাদগেট এলাকায় আসেন।’ এরপর রাব্বীর হাত থেকে টেলিফোন কেড়ে নেওয়া হয় বলে বুঝতে পারেন জাহিদ। পরে দ্রুত আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসাদগেট এলাকায় পৌঁছালে সেখানে পুলিশের টহলভ্যানে রাব্বীকে বসে থাকতে দেখেন তাঁরা। এ সময় আরো পরিচিতজনরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন এবং পুলিশের কাছ থেকে রাব্বীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
পরে একটু সুস্থ হওয়ার পর রাব্বী বন্ধুদের জানান, তাঁকে কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপর গতকাল রোববার সকালে মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন রাব্বী। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর সার্কেলের সহকারী কমিশনারের মাধ্যমে ওই জোনের উপকমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জাহিদ। সোমবারের (আজ) মধ্যে দোষী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন বলেও জানান জাহিদ।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামালউদ্দিন মীর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা জেনেভা ক্যাম্পের ভেতর থেকে বের হন। সেটা একটা মাদক জোন। আমার লোকেরা তখন তাঁকে চেক করতে যায়। তিনি চেক করতে না দিয়ে এ নিয়ে হৈচৈ করেন। পরে পুলিশ তাঁকে চেক করে ছেড়ে দেয়। অথচ তিনি দাবি করেছেন, পুলিশ নাকি টাকা চেয়েছে।’
ওসি জামাল বলেন, ওই ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে কেউ ছিল না। পরে তাঁর বন্ধু-বান্ধবদের ডাকা হয়। তিনি আরো বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে।’