শিক্ষকদের আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী
ক্লাসবর্জনরত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ রকম আশ্বাস দেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব।
আর ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
নতুন সরকারি বেতন কাঠামোতে নিজেদের সঠিক মর্যাদা দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগ এনে গত ১১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর ধর্মঘটের এক সপ্তাহের মাথায় আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে শিক্ষক নেতারা জানান, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষকরা তাঁদের দাবি-দাওয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী দেশে ফিরলেই এ বিষয়ে ইতিবাচক ঘোষণা আসতে পারে।
অধ্যাপক ফরিদ বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) বিস্তারিত শুনেছেন। আলোচনা থেকে কোনো কিছুই বাদ যায়নি। উনি বলেছেন, উনি নিজে ব্যাপারটি দেখবেন। উনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যাতে এ ব্যাপারে একটি সুন্দর সমাধান হয়ে যায়। ওই রকম পর্যায়ে আছে ব্যাপারটা।’
আপনারা কতটুকু আশ্বস্ত হয়েছেন জানতে চাইলে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন আশ্বস্ত, তাহলে আমরা অবশ্যই আশ্বস্ত। কিন্তু তারপরও আমরা ওনাকে বলেছি, আমরা যার যার শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করব এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলব। এরপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে কি না এবং ক্লাস শুরু হবে কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ বলেন, ‘আগামীকাল তো মিটিং হবে। আগামীকাল ক্লাস শুরু হবে না।’
এদিকে নতুন বেতন কাঠামোতে শিক্ষকদের পদমর্যাদা সচিবদের নিচে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মূলত দুটি বিষয় তুলে ধরেন। একটি হলো বিশিষ্ট অধ্যাপকদের সুপার গ্রেডে পদায়নের বিষয় আর অন্যটি হলো গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-১ এ উন্নয়ন। বৈঠক শেষে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাঁদের এই আশ্বাসটা দিয়েছেন যে গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-১ পর্যন্ত পদোন্নতির সোপানটা তৈরি করা হবে। তাঁদের অন্য দাবিগুলোর ব্যাপারে যথাযথভাবে পর্যালোচনা করা হবে।’
এর আগে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে গণভবনে আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় পিঠা-পুলির দাওয়াত আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আমন্ত্রণ পান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারাও। মাগরিবের নামাজের পর আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে করেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়।