মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি
বিএনপির নবনির্বাচিত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, যেই মুহূর্তে আমরা প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কথা বলছি এবং দীর্ঘদিন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পদ থেকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিবের দায়িত্ব নিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে তাঁর জামিন নাকচ করে তাঁকে আবারো কারাগারে পাঠানো হলো। দেশের সর্ববৃহৎ দলের মহাসচিবকে এভাবে কারাগারে রেখে সরকার কখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে না।
আজ বুধবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) উদ্যোগে সেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক আলোচন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেছেন।
এনডিপি এক সংবাদ বিজ্ঞপিতে জানিয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, আমরাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ‘স্বাধীনতার ৪৫-এ প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় ২০ দলীয় জোটের শীর্ষনেতারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ দল বিএনপির নবনির্বাচিত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর আমাদের প্রাপ্তির খাতায় হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, বেডরুমে সাগর-রুনি হত্যা হয়েছে, কুমিল্লায় মেধাবী ছাত্রী তনুকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে আর সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।যে সরকার রাজকোষ রক্ষা করতে পারে না তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। ব্যাংকের অসৎ কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশ ছাড়া কোনোভাবেই কেউ রাজকোষ খালি করতে পারে না। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের আইটি সেক্টরের মাধ্যমে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত আপনাদের জানিয়েছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আজকের এই আলোচনা সভায় ঐক্যবদ্ধভাবে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এখন লুটেরাদের রাজত্ব চলছে। তারা বিনা ভোটে এমপি থেকে শুরু করে উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে গদিতে বসতে চায়। বাংলাদেশের সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত আমরা কখনো দেখিনি ইউনিয়ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে। এই সরকার সেই তকমাও জাতিকে দেখাল।’
খন্দকার মোশাররফ আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। পুনরায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব আমরা ইনশাআল্লাহ। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার জাতির সঙ্গে তামাশা শুরু করেছে।তাঁরা ডিজিটাল সরকারের নামে রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি করে ফেলেছে। দেশে গুম-খুন-হত্যা আর লুটপাট ছাড়া কিছুই উপহার দিতে পারিনি।এই ভোটারবিহীন সরকার যত বেশি সময় ক্ষমতায় থাকবে সাধারণ মানুষের বারোটা তত দ্রুত বেজে যাবে।’ এ সময় তিনি সবাইকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজার সভাপতিত্বে ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরহাদুজ্জামান ফরহাদ, ডিএলএর মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য কারি আবু তাহের, বিএনপির নির্বাহী সদস্য রফিক সিকদার, এনডিপির যুগ্ম মহাসচিব ফরিদ উদ্দিন, শামসুল আলম, প্রচার সম্পাদক রাজু আহম্মেদ, বাংলাদেশ ন্যাপের যুগ্ম মহাসচিব বাবু স্বপন কুমার সাহা, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মো.আনোয়ার, বাস্তুহারা দলের সভাপতি শরীফ হাফিজুর রহমান টিপু মাস্টার, সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারী, সাবেক ছাত্রনেতা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন। স্বাগত বক্তব্য দেন এনডিপির আইন বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আবুল বাশার। উপস্থিত ছিলেন এনডিপির নেত্রী অ্যাডভোকেট সায়মা খান, দেওয়ান দিলরুবা, জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমুখ।