সাংসদ রানার ফাঁসির দাবিতে আওয়ামী লীগের মিছিল
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাসহ সব আসামির ফাঁসির দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
আজ সোমবার সকালে শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মিছিলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের স্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাহার আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মণি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নেন।
একই দাবিতে মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট শহরের বেবিস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আনিসুল ইসলাম রাজাকে। একই অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামে আরেকজনকে ডিবি পুলিশ গত বছরের ২৪ আগস্ট গ্রেপ্তার করে। তাঁরা দুজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে ওই দুজন উল্লেখ করেন, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই সাংসদ রানা, ব্যবসায়ী নেতা কাকন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সাহিদুর রহমান খান মুক্তি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা জড়িত।
পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি রাজা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন (২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি) সাংসদ রানা তাঁকে দায়িত্ব দেন ফারুক আহমেদকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কলেজপাড়ায় তাঁর একটি প্রতিষ্ঠানে ডেকে আনার জন্য। আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার পথেই রাজার সঙ্গে ফারুক আহমেদের দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে ফারুকের রিকশায় ওঠেন এবং তাঁকে সাংসদ রানার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পরবর্তী সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে আসামিদের সঙ্গে ফারুক আহমেদের কথা হয়। একপর্যায়ে ফারুককে ওই পদে প্রার্থী না হওয়ার অনুরোধ করেন তাঁরা। ফারুক এতে রাজি হননি। এ বিষয়ে কথা বলার একপর্যায়ে ফারুক সেখান থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে তাঁকে গুলি করেন কবির হোসেন। এ সময় বাকি আসামিরা ফারুকের মুখ চেপে ধরেন। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে সেখানকার রক্ত মুছে ফেলা হয়। পরে একটি অটোরিকশায় ফারুকের মরদেহ নিয়ে আসামি রাজাসহ দুজন দুই পাশে বসেন। পরে ফারুকের লাশ তাঁর বাসার কাছে ফেলে রেখে যান।