হত্যার পর স্বীকারোক্তি, জামিনে পলাতক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শিশু ইরান বাদশা (৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি আহমেদ শরীফ দিপুকে (৩০) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. রবিউল হাসান।
২০১১ সালের ৫ আগস্ট উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের শিশু ইরানের মরদেহ একটি পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। মামলার প্রধান আসামি আহমেদ শরীফ ওরফে দিপু একই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এখন পলাতক।
ইরানের বাবা ইমদাদুল হক ছিলেন কাথুলি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। ২০০৮ সালে ইমদাদুল হককে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিন বছর আগে ইরানের দুই চাচা রুহুল আমিন ও জাহিদ হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, এর পর থেকেই ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি আহমেদ শরীফ দিপুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে ইরানের মা রেনুকা বেগমের।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রেনুকা বেগমের সঙ্গে প্রেমের সূত্র ধরে শিশু ইরানকে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট বিকেলে স্থানীয় স্কুল মাঠ থেকে অপহরণ করে আসামি দিপু। ওই গ্রামের পাটক্ষেতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয় শিশু ইরানকে। ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই গ্রামের বাসিন্দারা শিশু ইরান বাদশাকে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরের দিন সকালে ইরানের মরদেহ পাটক্ষেতে পাওয়া যায়। ধলা পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) মকবুল হোসেন শিশু ইরানের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে নেন।
এ সময় আহমেদ শরীফ দিপুর অসংলগ্ন কথাবার্তার কারণে পুলিশ তাঁকে আটক করে। ওই দিনই ইরানের চাচা জাহাঙ্গীর আলম গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দিপুকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। ওই বছরের ৭ আগস্ট ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে দিপু এখন পলাতক। একই বছর ২৪ আগস্ট অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মকবুল হোসেন।
মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল হাসান আসামি আহমেদ শরীফ দিপুকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পল্লভ ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন কামরুল হাসান।