মেডিকেল শিক্ষার্থীকে গুলি করে অনুতপ্ত শিক্ষক রায়হান শরীফ
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করে অনুতপ্ত হয়েছেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। তিনি আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেছেন এবং সেটি অনিচ্ছাকৃত বলেও দাবি করেছেন। আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় সদর আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেন তিনি।
সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন বলেন, শিক্ষক তার কাজে জন্য অনুতপ্ত বলে আদালতকে জানিয়েছেন। তবে ঘটনা ঘটিয়ে এখন অনুতপ্ত হয়ে কী লাভ হবে।
এর আগে বিকেলে শিক্ষক রায়হান শরীফকে সিরাজগঞ্জ সদর আমলি আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন তিনি। পরে বিচারক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইন তাঁকে কারাগরে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার ঘটনা তদন্তে সকাল ১১টার দিকে কলেজে আসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত দল। সেখানে তদন্ত করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে ডিবি কার্যালয়ে যান তাঁরা। সেখানে তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য শোনেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গতকাল ৪ মার্চ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলায় ডা. সামিউন নুর শুভর কক্ষে তৃতীয় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এ সময় কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রায়হান শরীফ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। বকাবকির একপর্যায়ে তাঁর ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। এতে তিনি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং ওই কক্ষ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, চারটি ম্যাগাজিন, একটি গুলির খোসা, দুটি বিদেশি ছোরা, ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু, দুটি ব্রাশ নাকেল, অভিযুক্তের আইডি কার্ড, নিজ নামীয় ডিজিটাল সিল, মোবাইল ফোন ও একটি লেদারের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়াদুদ আলী ও গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী তমালের বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন শিক্ষক রায়হান শরীফ।