যমুনা ফিউচার পার্কে কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ ও মোবাইল ফোন চুরি
বেশ বড় চুরির ঘটনা ঘটল রাজধানীর অন্যতম শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্কে। দুটি স্বর্ণ ও তিনটি মোবাইল ফোনের দোকানে এ চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানিদের দাবি, প্রায় ২০০ কোটির টাকার স্বর্ণ ও মোবাইল ফোন খোয়া গেছে। আর পুলিশ বলছে, নির্দিষ্ট টাকার অংক জানে না তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়কে নেমে পড়েন সেখানকার মালিক ও কর্মচারীরা। তারা বিক্ষোভ করেন। ওই বিক্ষোভ এতোটাই উত্তেজনা তৈরি করে যে, ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
নাসির উদ্দিন নামের এ প্রত্যাক্ষদর্শী জানান, যমুনা ফিউচার পার্কের মধ্যে দোকান ভাংচুর করার মতো ঘটনা ঘটে। অনেকে বিক্ষোভ করছিলেন। উত্তেজনা ছিল এ এলাকায়।
এদিকে কবির হোসেন নামের এক দোকান মালিক জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তিনটি মোবাইল ফোন ও দুটি স্বর্ণের দোকানে চুরি হয়। এর প্রতিবাদে দোকান মালিক ও কর্মীরা রাস্তায় নামেন। সবার ক্ষোভ, এমন একটি স্থানে কীভাবে চুরির ঘটনা ঘটে? নিরাপত্তা কোথায়?
আজ শুক্রবার দুপুরে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে দু-পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালের পর দোকানীরা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেন। কিছুক্ষণ পর তারা রাস্তা ছেড়ে দেন। জুমার নামাজের পর আবার তারা রাস্তায় নামেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে মাজহারুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘তিনটি দোকানের লোকজন থানায় এসেছিলেন। আরও দুটি দোকানের লোকজন শনিবার আসবেন। তাদের একসঙ্গে আগামীকাল আবার আসতে বলেছি। আগামীকাল এ ঘটনায় মামলা হবে।’
দোকানিদের দাবি, মোট পাঁচটি দোকান থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘২০০ কোটি টাকার মামলামাল চুরি হয়েছে কিনা আমি জানি না। তবে, হতে পারে। কাল এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে, জানাতে পারব।’
পুলিশ বলছে, মার্কেটটির তৃতীয় তলায় তিনটি মোবাইল ফোন ও দুটি স্বর্ণের দোকানে চুরি হয়। আজ এ ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। মাজহারুল ইসলাম জানান, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে, এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ট্রাফিক অ্যালার্ট গ্রুপে দেখা গেছে সদস্যদের নানা রকম প্রতিক্রিয়া। ফারহাতুল জান্নাত নামে এক সদস্য লেখেন, ‘মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে যমুনা ফিউচার পার্কে মারামরি চলছে। আজকে যমুনা ফিউচার পার্কে কেউ বেড়াতে আসবেন না।’
এ ছাড়া অজানা রাজকুমার কাই নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ঘটনার সময় লাইভ করেছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। দুপক্ষের মধ্যে চলছে বাক-বিতণ্ডা। ভিডিওর শেষের দিকে দেখা গেছে, সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছেন।