সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড ষড়যন্ত্রমূলক ও পরিকল্পিত : সারজিস
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক ও পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় সরকারি অডিটরিয়াম হলরুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, সচিবালয়ে যেভাবে আগুন লেগেছে এবং এটার ধরন, যেমন অবস্থান যেমন—এটা কখনও সাধারণভাবে বা ন্যাচারালি বা দুর্ঘটনাবশত আগুন হতে পারে না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, ষড়যন্ত্র করে, প্ল্যান করে এই আগুন লাগানো হয়েছে। আপনি যদি আপনাদের জায়গা থেকে দেখেন, যে এই যে আগুনটি লেগেছে—এই আগুনটি আসলে লেগেছে আমাদের যারা ছাত্র প্রতিনিধি যারা সরকারে প্রতিনিধিত্ব করছে আমাদের নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ—তাঁদের অফিসগুলো জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। সেই জায়গা থেকে নরমালি আমাদের যারা ছাত্র প্রতিনিধি অন্তর্বর্তী সরকারে, যারা অভ্যত্থানে রাজপথ থেকে লড়াই করেছে। খুনি শেখ হাসিনার সময়ে যারা দালাল ছিল, অন্যায়-অপকর্ম, দুর্নীতি করেছিল –এগুলোর যে ফাইলগুলো ছিল সেই ফাইলগুলো তারা যখন বিভিন্নভাবে তদন্ত করছিল, সংরক্ষণ করছিল বিচারের জন্য। ঠিক তখনি এই রকম একটি প্ল্যান করে অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
সারজিস আরও বলেন, আমাদের জায়গা থেকে জাস্ট একটি জিনিস মনে করি, আসলে এত বড় অভ্যূত্থানের পরে আমাদের যেই বিপ্লবী ভূমিকায় থাকা উচিত ছিল, এই অন্তর্বর্তী সরকারকে যেই বিপ্লবী ভূমিকায় থাকা উচিত ছিল—আমরা এখন পর্যন্ত সেটা হতে পারিনি। আমরা আসলে বেশি ভালো সাজতে গিয়েছি, সুশীল হতে গিয়েছি, সুযোগ দিতে গিয়েছি। কিন্তু যাদের রক্তে দালালি, যাদের রক্তে দাসত্ব, যারা এত বছরের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের আপনি যতই সুযোগ দেন কোনো লাভ নেই।
সারজিস আরও বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকারে আমাদের যারা প্রতিনিধি রয়েছে, আমরা যারা রাজপথে রয়েছি আমাদের এখন সময় এসেছে এই বিপ্লবকে ধারণ করে বিপ্লবী ভূমিকায় অবর্তীণ হওয়া। যেকোনো জায়গায়, সেটা সচিবালয় হোক, বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি অফিস হোক। যে কেউ যদি বিন্দুমাত্র অন্যায় অনিয়ম, অপকর্ম, দুর্নীতি, ঘুষ এগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের চেয়ার থেকে টেনে নামাতে হবে। এই সুযোগ আর দেওয়া যাবে না। ওই ৩, ৪, ৫ আগস্টে খুনি শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান দিয়েছিল তারা এখন কীভাবে সচিবালয়ে বসে অফিস করে।
এই অভ্যূত্থান যদি সফল না হতো। তাহলে ওই খুনি শেখ হাসিনার দোসররাই আমরা যারা আন্দোলন করেছি আমাদের সবাইকে জেলে ভরার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করত মন্তব্য করে সারজিস বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, যারা বছরের পর বছর ধরে ব্যক্তি স্বার্থকে সামনে রেখে দেশ এবং দেশের মানুষের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। এসব তোষামোদকারী দালাল, দাসদের ওই চেয়ার থেকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশে অনেক ষড়যন্ত্র হবে, অলরেডি হচ্ছে। এগুলোকে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে না পারি তাহলে ওই খুনিদের পদচারণা আবার বাংলাদেশে দেখা যাবে।
সারজিস আরও বলেন, সচিবালয়ের এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। তদন্ত করে দৃশ্যমান বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং এ রকম ঘটনা আর যেন না ঘটে সেটার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজপথে যারা রয়েছে তাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ যেই ভূমিকা পালন করা দরকার সেটি পালন করতে হবে।