কুবিতে শিক্ষকদের জিডি, শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সপ্তাহ ধরে শিক্ষক সমিতির লাগাতার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচির মধ্যেই নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেন শিক্ষকরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১ জন শিক্ষক এ জিডি করেন।
এদিকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও ছাত্রলীগ।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি প্রশাসনিক পদসহ ২৫টি পদ থেকে পদত্যাগ করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদভুক্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষক।
জিডিতে শিক্ষকরা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা, শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষককে লাঞ্ছনা ও হুমকির নানা ঘটনা ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে শিক্ষকের বাসায় হামলার বিচার দাবি করে শিক্ষক সমিতির ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবি করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
আজ শিক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে স্মারকলিপি দিলেও শিক্ষক সমিতি তা গ্রহণ করেনি।
যদি রোববার দুপুরের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষার ঘোষণা না দেওয়া হয় তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস হোসেন সবুজ।
স্মারকলিপির বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘স্মারকলিপি প্রশাসনের কাছে দিতে হয়। আমাদের কাছে অনুলিপি দিতে পারে। এ জন্য তা গ্রহণ করিনি।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষা চালু করা এই মুহূর্তে খুব জরুরি। শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমি চাই, শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যান।’
১৭ জানুয়ারি গভীর রাতে দুই শিক্ষকের বাসায় পরিকল্পিত হামলার দ্রুত রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা, শিক্ষক লাঞ্ছনায় অভিযুক্ত ডিন এম এম শরীফুল করীমকে তদন্ত চলাকালীন সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে গত ২২ জানুয়ারি থেকে লাগাতার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আসছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে ১৯ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৯টি বিভাগে একটিও ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি। ২২ জানুয়ারি থেকে মোট নয় কার্যদিবসে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সেমিস্টারের ৩৩টি চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী।