রাবিতে ফের পরীক্ষা বন্ধ করল আ. লীগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবারও একটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে দিয়েছে মহানগর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আজ সোমবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে নিয়োগের জন্য উপাচার্যের বাসায় সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে তা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, গত তিন মাসে বিদ্যালয়ের ফটকে তালা, প্রশাসন ভবন ঘেরাও, একাডেমিক ভবন অবরোধ, পরীক্ষাকেন্দ্রে তালাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে দফায় দফায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত করে আসছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা ৩টার দিকে মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দীনের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন নেতাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসভবনের ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এরপর বিকেল ৪টার দিকে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী মৌখিক পরীক্ষার জন্য উপাচার্য বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে নেতাকর্মীরা বাধা দিয়ে তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনিচ্ছুক এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, আজ বিকেল ৪টায় তাদের মৌখিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই স্থানীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের উপস্থিত নেতাকর্মীরা চাকরিপ্রার্থী একজনকে সরিয়ে দেয়। সে জন্য তাঁরা আর পরীক্ষা দিতে যাননি।
এ বিষয়ে মতিহার থানা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. ইলিয়াস বলেন, ‘সোবহান (সাবেক উপাচার্য) স্যারের সময়ের এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে অন্যায়ভাবে সিন্ডিকেটে বাতিল করে দেওয়া হয়। পরে আবার নতুন করে দেওয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াত-শিবিরের লোকজনদের নিয়োগ দিচ্ছে। সে জন্য আমরা এখানে অবস্থান নিয়ে নিয়োগ বাতিল করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারোওয়ার জাহান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরে কর্মকর্তা পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগেই দেওয়া হয়েছিল। আজ মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থীদের ডাকা হয়। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
উপ-উপাচার্য আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি বিশেষ করে নিয়োগ বাণিজ্য ছিল সেটার বিরুদ্ধে আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি তা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা স্বস্তির জায়গা, ইতিবাচক দিক। আর এই পদক্ষেপ নিতে গিয়ে এবং স্থির থাকতে গিয়ে যারা নিয়োগ বাণিজ্য করতে চায় তাদের কাছ থেকে বাধা আসছে। তবে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে স্থির থেকেছি।’
আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব, সব সচেতন মহলের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ভাবমূর্তি আছে সেটা অক্ষুণ্ণ রাখার ক্ষেত্রে আমরা সচেষ্ট আছি।