রাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের কাজ বন্ধের অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভা বানচাল করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে রাবি ছাত্রলীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ৬০ থেকে ৭০ জন ছাত্রলীগকর্মী এসে গ্রন্থাগারের মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। তারা কর্মচারীদের মুক্তিযুদ্ধের কর্নার নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে বলেন। তাঁদের কথা শুনে কর্মচারীরা কাজ বন্ধ করে চলে যান।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমাদের ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী গ্রন্থাগারের কাজ বন্ধ করেনি। আমাদের লোকজন গেলে আমরা জানতাম, কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
গ্রন্থাগারের প্রশাসক ড. শফিকুন্নবী সামাদী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রের কাজ হচ্ছিল। সোয়া ৫টার দিকে আমাকে অফিস থেকে ফোন করে জানাল কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কর্মচারীরা আন্দাজ করছে তারা ছাত্রলীগ।’
ড. শফিকুন্নবী সামাদী আরো বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, শেখ হাসিনার সরকার এত চেষ্টা করছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করার। মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র হচ্ছে সেটা বন্ধ করে দিচ্ছে, এখন কোথায় যাই! এখন তো প্রশাসনও নাই, কার কাছে বলব। এখন মনে হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করাও পাপ!’
ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বাধায় সভা বানচাল
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভা বানচাল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাবি ছাত্রলীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কেনাসংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের দেওয়া রুলের জবাব কীভাবে দেবেন সে বিষয়ে আলোচনা করতে রেজিস্ট্রার এক সভার আহ্বান করেন। সেখানে রেজিস্ট্রার প্রবেশ করতে পারলেও রাজশাহীর স্থানীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে অন্যরা প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে সভা পণ্ড হয়ে যায়।
তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু এবং মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সভা ভণ্ডুল হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারকে ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কেনায় অনিয়মের অভিযোগে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে কেন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক শিক্ষার্থীর করা আবেদনের শুনানি শেষে গত ১৪ মার্চ বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের আইজি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজকের এই সভা ডাকা হয়েছিল।