শিক্ষককে ‘ঘাড় ত্যাড়া’ বলা সেই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষককে লাঞ্ছনার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী বায়েজীদ ইসলামের সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
তবে লাঞ্ছনার ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই শিক্ষক। এখনো এই তদন্ত কমিটি কোনো বৈঠক করেনি বলেও জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারির ঘটনায় বায়েজীদ ইসলামের বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক মো. নাহিদুল ইসলাম।
লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষক উল্লেখ করেন, “তাঁকে উদ্দেশ্য করে বায়েজীদ বলেন, ‘ঢাকায় গিয়ে বসে থাকেন, কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা নেন না। ঘাড় ত্যাড়া শিক্ষক, সবাইকে পেটালে ঠিক হবে।”
এ অভিযোগের পর গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা পরিচালক মুহম্মদ আহসান উল্লাহকে আহ্বায়ক করে প্রক্টর কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও সহকারী রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরীকে সদস্য করা হয়।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ মার্চ উপাচার্যের কাছে বহিষ্কারাদেশ পুনর্বিবেচনা করতে আবেদন করেন ওই শিক্ষার্থী। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে। তবে কী কারণে লাঞ্ছনার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলো এ বিষয়ে ওই আদেশে কিছু বলা হয়নি।
লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক মো. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। যদিও আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আগে শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি বিচারহীনতার সংস্কৃতি দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো।’ তদন্ত কমিটি এতদিনেও তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইনি বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মুহম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ পর্যন্ত তদন্ত কমিটির কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই কারো সঙ্গে কথা বলা যায়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘উপাচার্য নিজ ক্ষমতা বলেই ওই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছেন। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।’