কুড়িয়ে পাওয়া লাখ টাকা ফেরত দিলেন রাবি ছাত্রী
কুড়িয়ে পাওয়া এক লাখ টাকা মালিককে ফেরত দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রী।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুমিয়ারা খাতুন সুমি ওই টাকা ফেরত দেন।
সুমি জানান, গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহীর সাহেব বাজারে যান তিনি। অনেক কিছু কেনাকাটা শেষে অসুস্থ বান্ধবীকে দেখতে নগরীতে অবস্থিত তাঁর বাসায় যান। সেখানে নিজের ব্যাগ খুলে দেখেন এক লাখ টাকা! পরে কোনো কিছু বুঝতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাকর্মের তত্ত্বাবধায়ককে ফোন করেন তিনি। তাঁকে বিষয়টি বিস্তারিত খুলে বলেন। এর পরই সুমি ফিরে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে।
গণিত বিভাগের ওই ছাত্রী আরো বলেন, হলে ফিরে তিনি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। কৌশলে ফোন করেন টাকার ব্যাগে থাকা ফোন নম্বরে। সেখান থেকেও জানানো হয়, তাদের কিছু হারায়নি। কিন্তু বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঊষা ফ্যাশন থেকে ফোন করে জানায়, তাদের এক লাখ টাকা হারিয়েছে। পরে যাচাই-বাছাই করে টাকা হারানোর সত্যতা মিললে আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে সুমি প্রকৃত মালিকের কাছে টাকা তুলে দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বাসিন্দা শীষ মোহাম্মদের মেয়ে সুমি বলেন, ‘অনেক কিছু কেনাকাটা শেষে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ছেলের পোশাক বের করতে গিয়ে দেখি ওই ব্যাগে এক লক্ষ টাকা। দোকানের ব্যাগে যে মোবাইল নম্বর ছিল ওই নম্বরে ফোন করে তাদের গণিত বিভাগের অফিসে আসতে বলি। শিক্ষকদের উপস্থিতিতে প্রমাণসাপেক্ষে টাকার প্রকৃত মালিককে তা ফেরত দিয়েছি।’
টাকা ফেরত পাওয়া ঊষা ফ্যাশনের মালিক আশরাফুল আলম সেতু বলেন, ‘আমি কর্মচারীদের কাছে টাকার হিসাব চাই। কিন্তু তারা তা দিতে পারে না। এদিকে এক মেয়ে আমাদের কিছু হারিয়েছে কি না জানতে চেয়ে ফোন করেছিল। তারপর তাকে আমরা ফোন দিই। পরে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে টাকা নিয়ে আসি। সুমি আমাদের কাছে টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার না করলে সেটা পাওয়া সম্ভব ছিল না।’
‘তাকে আমরা ১০ হাজার টাকাও দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সুমি নেয়নি।’
এ বিষয়ে সুমি বলেন, ‘এই টাকা তো আমার না। তাহলে তার কাছ থেকে কেন টাকা নেব? আমি একটি বই পেলে যেমন কোনো কিছু দাবি ছাড়াই প্রকৃত মালিককে দিয়ে দিতাম, এই টাকাও আমার কাছে তেমনই। প্রকৃত মালিককে আমি টাকা ফেরত দিতে পেরেছি, এতেই আমার ভালো লাগছে।’