প্রভোস্টের গাড়িতে ‘বাইরে গেল’ শিক্ষার্থীদের ইফতারি
শিক্ষার্থীদের ইফতারির প্যাকেট না দিয়ে তা বাইরে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল প্রভোস্টের বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার চতুর্থ রোজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উদ্যোগে আবাসিক ১৮টি হলে ইফতারি বিতরণ করা হয়।
এর মধ্যে অন্তত দুটি হলে অনেক শিক্ষার্থী ইফতারির প্যাকেট পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হলগুলো হলো- মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান ও মাস্টারদা সূর্য সেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে শিক্ষার্থীদের বাসি-পচা খাবার পরিবেশন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রভোস্টের নামে ৩০ থেকে ৪০টি ইফতারির প্যাকেট বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ কারণে ছাত্রদের অনেকেই ইফতারির প্যাকেট পাননি। প্রভোস্টের গাড়িতে করে ইফতারি বাইরে নিতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আজ ছাত্রদের ১৩টি ও ছাত্রীদের পাঁচটি হলে ইফতারি বিতরণ করা হয়েছে। খাবারের প্যাকেটে বিরিয়ানি ও গরুর মাংস ছিল। এ ছাড়া প্রতিটি প্যাকেটের সঙ্গে কোমল পানীয়, জিলাপি ও খেজুর দেওয়া হয়। এতে ছাত্রীদের হলের ইফতারির সামগ্রী বিতরণে কোনো সমস্যা হয়নি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জিয়াউর রহমান হলে ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্র ইফতারি পাননি। অথচ ওই হলের প্রভোস্টের নামে অন্তত ৪০টি খাবার হলের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সূর্য সেন হলেও অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী ইফতারির খাবার পাননি। পরে হলের দোকান থেকে পেঁয়াজু ও জিলাপি কিনে ছাত্রদের দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমার হলে খাবার সংকটের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। তবে আজকে ইফতারির ২০-৩০টি খাবার কম পড়ে। পরে বাইরে থেকে খাবার কিনে ছাত্রদের দেই।’
গাড়িতে খাবার বাইরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি তো খাবার বাড়িতে নিয়ে যাইনি। তবে হলের সাবেক প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকদের বাসায় খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘ইফতার করার সময় প্যাকেট খুললে বাসি খাবারের পচা গন্ধ পাওয়া যায়। তাই ওই খাবার খাওয়া যায়নি। পরে হলের দোকান থেকে নিজের টাকায় ইফতার কিনে খেয়েছি।’
ছাত্রদের নষ্ট খাবার পরিবেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে কিছু খাবার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। একসঙ্গে অনেক খাবার পরিবেশন করতে গেলে একটু সমস্যা হয়। কোনো কোনো খাবারের বক্সের মধ্যে যেটা আগে প্যাকেট করা হয়েছিল, সেগুলোর কিছু নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে সবাইকে সুষ্ঠুভাবে পরিবেশন করা হয়েছে।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হলে ইফতারির খাবার কম পড়া বা প্রভোস্টের গাড়িতে খাবার বাইরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। তবে প্রভোস্টের গাড়িতে ইফতারিগুলো বিভিন্ন স্থানে বিতরণের জন্য নিয়ে যাওয়া হতে পারে।’