পূর্ণাঙ্গ কমিটি না পেয়ে ঢাবির ছাত্রলীগ নেতাদের ক্ষোভ
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল শাখাগুলোয় এক বছরের জন্য কমিটি দেওয়া হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। এরই মধ্যে নয় মাস কেটে গেছে। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে। কিন্তু অধিকাংশ হলের এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি। এতে করে ত্যাগী ও পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জানান, গত জুলাইয়ের মধ্যে সব হলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার জন্য হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। কিন্তু নিজের অবস্থান ধরে রাখতেই তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় নেতাদের নির্দেশ অমান্য করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাবির ১৮টি হলে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রদের ১৩টি ও ছাত্রীদের পাঁচটি হল। ছাত্রীদের সবকটি হলে কমিটি দেওয়া হলেও ছাত্রদের মাত্র ছয়টি হলের কমিটি দেওয়া হয়েছে। বাকি হলগুলোর কমিটি এখনো দেওয়া হয়নি।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দেওয়া হলগুলোর হলো শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, নবাব সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম), স্যার এফ রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বিজয় একাত্তর, কবি জসীমউদদীন ও জগন্নাথ হল।
অভিযোগ উঠেছে, কমিটি না দেওয়া হলগুলো থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করা হয় প্রায় অর্ধশত ছাত্রলীগ কর্মীকে। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ তুলে না নেওয়ায় কমিটি দিতে পারছেন না হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘অনেক বহিষ্কৃত কর্মীকে সংগঠনে পদ দেওয়ার জন্যই কমিটি দিতে দেরি করছেন হল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বহিষ্কৃত কর্মীদের বহিষ্কারাদেশ তুললেই তাঁরা কমিটি দিতে পারে।'
জহুরুল হক হলের পদপ্রত্যার্শী এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছি। সংগঠনের কোনো প্রোগ্রাম বাদ দিই না। সে জন্য সংগঠনকে শক্তিশালী করতে একটা ভালো পদ দরকার। কিন্তু নেতারা কমিটি দিতে দেরি করছেন।'
এসএম হলের এক জ্যেষ্ঠ ছাত্রলীগ কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নেতাদের চাপে এত দিন মিছিল-মিটিং করেছি। তাঁরা আমাকে ভালো পদ দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু পদ তো দূরের কথা, কমিটি দেওয়ার নাম নেই।'
হলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দেওয়ার বিষয়ে স্যার এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি কমিটি দিয়ে দেবো।’
জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হল কমিটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় পদপ্রত্যাশীদের নাম জমা দিয়েছি। তাঁরা কমিটি দিতে বিলম্ব করছে। আশা করি, সব হলের কমিটি এক সঙ্গে দেবো।’
এসএম হলের সাধারণ সম্পাদক তাপস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা পদপ্রত্যাশীদের থেকে সিভি নিয়েছি। যাচাই-বাছাই করছি। এ মাসের মধ্যেই কমিটি হয়ে যাবে।’
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের নির্দেশ ছিল গত জুলাইয়ের মধ্যে হল শাখাগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ের কারণেই তা দিতে বিলম্ব হচ্ছে।’
পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে মোতাহার বলেন, ‘যেসব হলের কমিটি দেওয়া হয়নি, তার যাচাই-বাছাই চলছে। চলতি মাসের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করব।’