পুলিশের জন্য আন্দোলনকারীদের ‘লাল গোলাপ’
বিকেল ৩টার পর থেকেই রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে জমে যায় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের ভিড়। রাস্তা আটকে স্লোগান দিতে থাকে তারা। বিকেলের শেষ দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এমনকি সরিয়ে দিতে আন্দোলনকারীদের সামনেও আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যদের লাল গোলাপ ফুল উপহার দেয় তারা।
আজ রোববার বিকেল পাঁচ দফা দাবিতে অবরোধ শুরু করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তারা এখনো শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আছে। এ সময় শাহবাগের চারদিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সন্ধ্যা ৬টার কিছুক্ষণ আগে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে উদ্যত হয় পুলিশ। তখন আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের ফুলের দোকান থেকে গোলাপ ফুল সংগ্রহ করে। পরে পুলিশ সদস্যদের হাতে ওই ফুল তুলে দেয়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আসে। পরে তাদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে জাতীয় শহীদ মিনার, ফুলার রোড, পলাশী, নীলক্ষেত, কাঁটাবন হয়ে শাহবাগে আসে।
শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিলে আশপাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ তাদের ১০ মিনিট অবস্থানের কথা বললেও শিক্ষার্থীরা এখনো সেখানে অবস্থান করছে।
এ সময় আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তাদের হাতে রয়েছে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও,’ ‘কোটা দিয়েকামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই,’ ‘১০% এর বেশি কোটা নয়।’
শাহবাগ থানার সামনে থেকে জলকামান এগোতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাঁশ দিয়ে পথ আটকে দেয়। তারা জলকামানের সামনে দাঁড়িয়ে ও বসে পড়ে কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চলছে। ওই আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা এই কর্মসূচি পালন করে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে কোটার সংস্কার করতে হবে। আর আমাদের এই দাবি যৌক্তিক।
আমরা চাই সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে।’
কোটা সংস্কারকারীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে- সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা, নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।