বুয়েটের ভবনগুলোতেও অগ্নি নিরাপত্তার ঘাটতি
রাজধানীর একটি সুউচ্চ ভবনেও অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই। নামীদামী শপিংমল, হাসপাতাল, এমনকি বুয়েটের ভবনগুলোতেও অগ্নি নিরাপত্তায় ঘাটতি আছে। আর সেই ঘাটতির দায় ভবনের স্থপতি ও প্রকৌশলীরা এড়াতে পারেন না বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আজ শনিবার সকালে অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সেমিনারে এভাবেই ঢাকার উঁচু ভবনের অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বনানীর এফ আর টাওয়ার, পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা, বসুন্ধরা শপিংমলসহ বড় বড় অগ্নি-দুর্ঘটনার উদাহরণ টেনে বিশেষজ্ঞরা জানান, এসব দুর্ঘটনার পরে উঁচু ভবনগুলোতে যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা চিহ্নিত করা হয়েছে। তারপরেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন না ভবন মালিকরা। অধিকাংশ উঁচু ভবনে বিকল্প সিঁড়ি নেই। কিছু ভবনে থাকলেও তা বন্ধ করে রাখা হয়। আবার এসব সিঁড়ির দরজা আগুন প্রতিরোধী নয়। বুয়েটের ভবনগুলোতেও রয়েছে নানা ত্রুটি। এমনকি এই সেমিনার চলছিল বুয়েটের যেই মিলনায়তনে সেখানকার ফায়ার স্টিংগুইশারও কয়েক বছর ধরে বিকল, বিকল্প সিঁড়িও বন্ধ।
বিশেষজ্ঞরা ভবন নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করে ভবন নির্মাণ, পরবর্তীতে ভবনের কাঠামোর কোনো পরিবর্তন না করা, আগুন নেভানোর জন্য আলাদা পানির লাইন স্থাপন, ভবনের বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অগ্নি প্রতিরোধের কোর্স চালুসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন। বাজারে অগ্নি প্রতিরোধের যেসব যন্ত্রপাতি বিক্রি হচ্ছে তা মানসম্মত কিনা তাও নিশ্চিত করার তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাকসুদ হিলালী ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামকে অনুরোধ করে বলেন, অগ্নি প্রতিরোধকযুক্ত নয় এমন একটি স্টিকার বুয়েটের প্রত্যেকটি ভবনে লাগিয়ে দিবেন মাননীয় মেয়র। আমরা সচেতন হব না। ছাত্রদের সচেতন হওয়া উচিত। ছাত্রদের সচেতন করার জন্য এই রকম একটি স্টিকার মেয়রের কাছে আমি চাই।
জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, বেশ প্রেস্টেজিয়াস বিল্ডিং, সেগুলোর ফায়ার সেফটির দিক থেকে খুব একটাও নাই বোধহয় যা দেখানো হলো। প্রত্যেকটিরই ডেফিসিয়েন্সি আছে। এটার জন্য দায়ী আমাদের স্থপতি, প্রকৌশলী এবং আমাদের ব্যবহারকারীরা।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিল্ডিং সেফটি, ফায়ার সেফটি এবং ইলেকট্রিক্যাল সেফটি কিন্তু প্রত্যেকটি বিল্ডিংয়ে পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেকটি মার্কেট ও প্রত্যেকটি হাসপাতালে আমরা সময় বেধে দিব। ২০টি বিল্ডিংকে আমরা মডেল বিল্ডিং হিসেবে স্বীকৃতি দেব। বিল্ডিংয়ের মালিকই কিন্তু সব সেফটি নিশ্চিত করবে। যদি সেফটি নিশ্চিত না করা হয় তাহলে আমরা ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ করে দিব। তাজরিনের অগ্নিকাণ্ডের পর গার্মেন্টস কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেছে। সবার সহযোগিতায় অন্যান্য ভবনেও তা মোটেও অসম্ভব নয়।’