ছাত্রলীগকর্মীকে যৌন হয়রানি, শিক্ষকের শাস্তি দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাষা বিভাগের (উর্দু) প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর এ অভিযোগ করেন। ওই ছাত্রী ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে ওই শিক্ষক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই ছাত্রী ছাত্রলীগকর্মী পরিচয়ে হলে সিট দাবি করলে প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাঁকে আবেদন করতে বলেছিলাম। তারপর ওই মেয়ের সঙ্গে আর কোনো কথা হয়নি। এ অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেন রাবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মানববন্ধন শেষে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দেন।
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেন, ‘গত ২৩ নভেম্বর আমি বেগম রোকেয়া হলের রুমে সিটের জন্য প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যাই। সেখানে হলের আবাসিক শিক্ষক এ টি এম রফিকুল ইসলামও ছিলেন। প্রথমে তাঁরা আমার অ্যাকাডেমিক পরিচয় জানতে চান। আমি আমার অ্যাকাডেমিক পরিচয় দিলে তাঁরা সিট দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে আমি আমার সাংগঠনিক পরিচয় দেই। তারপর রফিকুল স্যার আমাকে এবং আমার ঐতিহ্যবাহী সংগঠন সম্পর্কে প্রাধ্যক্ষের সামনেই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। আমি তাঁদের ব্যবহারে মনঃক্ষুণ্ণ হলে প্রাধ্যক্ষ ম্যাডাম আমাকে হলের সিটের জন্য আবেদনপত্র লিখতে বলেন।’
ওই ছাত্রী বলেন, “এরপর ১৬ ডিসেম্বর র্যালি শেষ করে হলে ফিরতে দেরি হয় এবং হল গেটে রফিকুল ইসলাম স্যার আমাকে প্রাধ্যক্ষের রুমে দেখা করতে বলেন। আমি রুমে গেলে প্রথমেই তিনি আমাকে বলেন, ‘শুধু ছাত্রলীগ করলেই কি হলে সিট হবে? হলে সিটের জন্য আমাদের কাছে আসতে হবে’।” এ সময় তাঁর কথাবার্তা এবং শারীরিক প্রকাশভঙ্গি ছিল আপত্তিকর ও অশোভনীয় বলেও ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। ১৬ ডিসেম্বর মেয়েটির সঙ্গে আমার দেখাই হয়নি। ওই মেয়েকে সিট না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনায় শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে রাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, যৌন হয়রানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করায় অভিযুক্ত শিক্ষকরা বারবার বেঁচে যান। একজন ছাত্রলীগকর্মীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশাসন ওই শিক্ষকের শাস্তির ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও বক্তারা হুমকি দেন।
রাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাওসার আহমেদ কৌশিকের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রহমান রানা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম রুবেল, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সভাপতি সবুজ সারওয়ার, রাবি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সহসভাপতি আহসান হাবীব, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাবি শাখার সভাপতি মতিউর রহমান মর্তুজা প্রমুখ।