বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টি করতে না পারলে কলেজই ভালো : শিক্ষামন্ত্রী
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টি করতে না পারলে কলেজই ভালো। আর তাই আলাদা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অর্থ দেওয়ার কোনো মানে হয় না বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জ্ঞান সৃষ্টি, অনুসন্ধান, সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে বের করবেন। আর যদি তাঁরা সেটা করতে না পারেন তাহলে আমরা কেন এখানে অর্থ দেব। তাহলে তো কলেজই ভালো।’
আজ মঙ্গলবার বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। নগরীর খড়গড়ি বাইপাস এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত মূল ক্যাম্পাসে সকালে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম নাহিদ আরো বলেন, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে তৈরি হতে হবে। গতানুগতিক শিক্ষার মাধ্যমে এটা সম্ভব না। এ জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষা। যে শিক্ষায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। শুধু পরীক্ষায় পাস করলে হবে না। আমাদের দেশের সমস্যার সমাধান বাইরের কেউ করে দেবে না। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরই জ্ঞান সৃজন করতে হবে, গবেষণা করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জ্ঞানের পাশাপাশি সততা, নিষ্ঠা, আদর্শবান মানুষ গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য। যেখানে নতুন প্রজন্মকে তার মেধা-যোগ্যতা দিয়ে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক দেশে পরিণত করবে। আমরা সেভাবেই তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তুলব।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এ পরিবর্তন আনার জন্য আমাদের গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন জরুরি ছিল। আর এ কারণে সব ধরনের মানুষের মতামত নিয়ে আমরা নতুন শিক্ষা পদ্ধতি প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করেছি। শিক্ষকদের সে আঙ্গিকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।’
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘অনেকেই বলেছিলেন, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসলে মাদ্রাসা শিক্ষা থাকবে না। কিন্তু আমরা নতুন আরো ৩১টি মাদ্রাসা অনুমোদন দিয়েছি। সেই সঙ্গে স্কুল-মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন কাঠামোতেও কোনো বৈষম্য রাখিনি।’
‘এখন আর সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য করার অবকাশ নেই। সবাই শিক্ষা কার্যক্রমে অবদান রাখছে। উভয় ধারার শিক্ষার্থীরাই আমাদের সন্তান। সরকার তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না। তবে আমাদের অবশ্যই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম সাইদুর রহমান খান, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. শাহ নওয়াজ আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম বেগ, নর্থবেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ওসমান গনি তালুকদার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল হোসেন চৌধুরী।