২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি
২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে। সরকার স্বীকৃতি না দিলেও দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালা’র তৃতীয় সিরিজের নতুন ১০টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান।
আজ শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ মোড়ক উম্মোচন করা হয়। ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট্র অনুষ্ঠাটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, লেখক, সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক শাহরিয়ার কবির এবং বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক তাজুল ইসলাম।
মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা দিতে হবে। আর সরকার যদি এ দিনকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়, তাহলে দেশের মানুষ যেন তার নিজ নিজ এলাকায় দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে। তাহলে আলাদাভাবে সরকারের স্বীকৃতির আর প্রয়োজন হবে না।’
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আমাদের দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং দলের একজন সিনিয়র নেতা মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের বক্তব্য পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা মাত্র।’ তিনি বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কেউ নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। বিচারকদেরকে নিরপেক্ষ নয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকতে হবে। কেউ যদি গণহত্যাকারীর পক্ষে সাক্ষী দেয় তাহলে সে ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল কি ছিল না সেটা বিষয় নয়। বিষয় হলো যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে তার সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি দিতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, ‘যারা কথায় কথায় আইন আদালত সম্পর্কে কথা বলে অথচ মুক্তিযুদ্ধ যদি না হতো তাহলে তাদের এ বোধ আসত না। পৃথিবীর কোন দেশ আমাদের প্রশংসা করল সেটা দেখার বিষয় নয়, কারণ গণহত্যা এ ভূখন্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা যেভাবে পাকিস্তানিদের মানি নাই তাদেরও মানব না। আমরা তাদের ভয় পাই না। তবে ভয়ের মধ্যেই বেঁচে আছি।’
১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালার তৃতীয় সিরিজের ১০টি বইয়ের মধ্যে রয়েছে চড়ারহাট গণহত্যা, লেখক শাহীন আলম, জগৎমলপাড়া গণহত্যা, লেখক চৌধুরী শহীদ কাদের, ডাকরা গণহত্যা, লেখক বিষ্ণুপদ বাগচী, গোড়ান চাটিয়াছড়া গণহত্যা, লেখক মামুন তরফদার, কৃষ্ণপুর ধনঞ্জয় গণহত্যা, লেখক মোতাহার হোসেন মাহবুব, শ্রীধাম লক্ষ্মীখালি গণহত্যা, লেখক সত্যজিৎ রায় মজুমদার, পশ্চিম রাজারামপুর গণহত্যা, আজহারুল আজাদ জুয়েল, চাঁদপুর বড় রেলস্টেশন গণহত্যা, লেখক দেলোয়ার হোসেন, রমানাথপুর গণহত্যা, লেখক মুনিরা জাহান সুমি এবং ঝাড়–য়ার বিল গণহত্যা, লেখক আহম্মেদ শরীফ।