সাঁতার জানতেন, তবু তলিয়ে গেলেন জিসান
গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে জামিলুর রহমান জিসান নামের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স ক্লাবের পুকুরে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন জিসান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জামিলকে উদ্ধার করে সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জামিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের ও শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের কার্যকরী সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের জাবি শাখার সভাপতি দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল।
জামিল ভালো সাঁতার জানতেন বলে জানিয়েছেন গোসলের সময় তাঁর সঙ্গে থাকা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুম্মান ও সোয়েব।
সহকারী প্রক্টর মেহেদী ইকবাল জানান, জামিল দুবার পুকুরের এপাড় থেকে ওপাড়ে যান। একপর্যায়ে ডুবে যান। তখন পাড়ে থাকা সহপাঠীরা সাঁতার না জানায় পানিতে নামেননি। পানিতে ডোবার ২০ মিনিট পর তাঁরা অন্য এক সহকারী প্রক্টরকে বিষয়টি জানান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জিসানের কয়েকজন বন্ধু জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বৃষ্টির সময় গোসল করতে পুকুরে নামেন জিসান। পুকুরের এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে গিয়ে ফিরে আসার সময় (তখন বিকেল সাড়ে ৪টা) মাঝপুকুরে হঠাৎ পানিতে তলিয়ে যান তিনি।
পাড়ে থাকা বন্ধুরা পানিতে না নেমে তিন-চার মিনিট পর বিষয়টি জানানোর জন্য পুকুরের কাছেই অবস্থিত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক শিক্ষকের বাসায় যান। কিন্তু ওই শিক্ষক তখন বাসায় ছিলেন না।
পরে ফোন দিয়ে অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানানো হয়। তারও বেশ কিছুক্ষণ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর এসে পানিতে নেমে জিসানকে খুঁজতে শুরু করেন। ডুবে যাওয়ার প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর (তখন বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট) খুঁজে পাওয়া যায় জিসানকে। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে জিসানকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৬টায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তমাল রায় জিসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
জামিলকে উদ্ধারের সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, প্রক্টর তপন কুমার সাহাসহ অন্যা শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অশ্রুসিক্ত দেখা গেছে।
জিসানের মৃতদেহ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।