জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ
কথা কাটাকাটির জের ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরান ঢাকার ঘড়ি ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংক শাখা সংলগ্ন ফটক ও পাটুয়াটুলীর এস আর ভবন মার্কেট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর এস আর ভবনের সায়েম টাইমস সেন্টার নামের ঘড়ির দোকানে ঘড়ির বেল্টে ছিদ্র করাতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম ব্যাচের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ণব ও রনি। এ সময় দোকানদারের সঙ্গে তাঁদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দোকানের মালিক ও কর্মচারী মিলে দুই শিক্ষার্থীকে আটকে শাটার বন্ধ করে বেধড়ক মারপিট করে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
খবর পেয়ে অর্ণব ও রনির বন্ধুরা তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে ঘড়ি ব্যবসায়ী মালিক-কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে লোহার রড, চাপাতি, লাঠিসোটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ব্যবসায়ীরা পাটুয়াটুলীর ঘড়ির মার্কেট সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং ব্যাংক ভবন লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে।
পরে ঘটনাস্থলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদের ওপরও ঘড়ি ব্যবসায়ীরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীদের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংক শাখার কাঁচের জানালা ভেঙে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় হিসাববিজ্ঞান বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাসেল, অর্ণব, রনি, শাকিল, সজীব, নাজিম, সাকিব, হাবিবুর, ইমরান। এদের মধ্যে গুরুতর আহত রাসেল, অর্ণব, রনি ও শাকিলকে মিডফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরীফুল ইসলাম বলেন, এর আগেও পুরান ঢাকার ঘড়ি ব্যবসায়ীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অনেকবার হামলা করেছে। আগামীকাল সোমবার ঘড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছে। সেখানে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয়, ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য দাবি জানানো হবে। ব্যবসায়ীরা যদি এসব দাবি মেনে না নেয় তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান এই নেতা।
একই কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদও। তিনি জানান, আগামীকালের বৈঠকে যদি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় কোনো সমাধান না আসে তাহলে হামলাকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
তবে বাংলাদেশ ঘড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল বাসার শিক্ষার্থীদের ওপর এবং ব্যাংকে হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘড়ি দোকান মালিক কর্মচারীদের ওপর প্রথমে হামলা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী, মালিক ও কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের পাল্টা ধাওয়া করে।