পটুয়াখালীতে নির্বাচনে হেরে প্রতিপক্ষের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা
পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নে বিজয়ী ইউপি সদস্যের সমর্থকদের ১২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে পরাজিত প্রার্থী সাজাহান হাওলাদার ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়নের অফিসের হাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় হামলায় বিজয়ী প্রার্থীর নাতি মো রায়হান (১৮) ও মো. মারুফকে (১৭) মেরে আহত করা হয়েছে। আহতরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নির্বাচনে বিজয়ী ইউপি সদস্য মো. ফারুক জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার দুই নাতি বাজারে গেলে মারধর করে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত প্রার্থী সাজাহান হাওলাদারের সমার্থকরা। বিষয়টি থানায় জানালেও পুলিশ আসে। তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর সাজাহান হাওলাদারের সমর্থক সরোয়ার হাওলাদার (৪৫), সাখাওয়াত হাওলাদার (৩৮), রুবেল হাওলাদার (২৩), মিজানুর রহমান মন্টু খান (৫০), হোসেন মৃধা (২৬) রিয়াজ হাওলাদারসহ ২০-২৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুনরায় বাজারে আসে। এ সময় তারা বাজারে আমার সমর্থক সাহাজুল চৌকিদার ও মজিবুর মুসুল্লির কাপড়ের দোকান, জাকির চৌকিদারের লেপ-তোষকের দোকান, আমাদের সার-ঔষধের দোকান, হোসেন হাওলাদার ও মনির ব্যাপারীর মুদি দোকানে হামলা চালায়। এ ছাড়া ও ফার্মেসি, মোবাইল ফোনের দোকান, চায়ের দোকানসহ মোট ১২টি দোকানের শাটার কুপিয়ে কেটে ফেলে। এ সময় দোকানে থাকা অনেক মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা।
মোবাইল ফোনের দোকানি মো. নুরুল হক চৌকিদার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাজাহানের কিছু লোক বাজারে এসে ফারুক মেম্বারের দুই নাতিকে মারধর শুরু করে। বাজারে এসব তাণ্ডব দেখে আমরা দোকান বন্ধ করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হলে পথিমধ্যে দেখি সাজাহানের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুনরায় বাজারের দিকে আসছে। তারা ২০-২৫ জন লোক হবে। পরে রাতে আমাকে খবর দেওয়া হয় যে আমার দোকান কুপিয়েছে এবং মালামাল নিয়ে গেছে। রাতে আর ভয়ে আসিনি, সকালে এসে দেখি এই অবস্থা।
ওই বাজারের দোকানি মো. আলী হোসেন বলেন, সাজাহানের লোকজন প্রাথমে বাজারে এসে ফারুক মেম্বারের নাতিকে মারধর করে। এ সময় ওই ছেলে দুইটা তাদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে খালের পানিতে পড়ে। একটা ছেলের হাত ভেঙে গেছে মনে হয়। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পর বাজারের সব দোকান বন্ধ করে সবাই চলে যায়। নির্বাচনে যারা ফারুক মেম্বারের পক্ষ করেছে তাদের দোকানগুলো কুপিয়েছে এবং দোকান থেকে মালামাল নিয়ে গেছে তারা।
আবদুর রাজ্জাক চৌকিদার বলেন, আমি বাজারের একটি দোকানে বসে চা পান করছিলাম। সাজাহানের সমর্থকদের বগি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আসতে দেখে আমি দৌড়ে আমার বাড়িতে চলে যাই। তারা পিছু পিছু এসে আমার ঘরে ওঠে। পরে আমাকে না পেয়ে তারা চলে যায়।
এ বিষয়ে সাজাহান হাওলাদার বলেন, তারা নিজেরা দোকান কুপিয়ে আমাদের দোষারোপ করছে। তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের ছেলে জালাল মাওলানা ওই বাজার মসজিদের ইমাম। সে নির্বাচনে আমার পক্ষ করায় তাকে ওই মসজিদে নামাজ পড়াতে দিচ্ছে না মো. ফারকের সমর্থকরা। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ওই এলাকার মসজিদের ইমাম একজন ইউপি সদস্যের পক্ষ করাকে কেন্দ্র করে সমস্যা হয়েছে। এ রকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। তার মীমাংসা হয়ে গেছে।