ঢাকাই সিনেমার অভিনেতা প্রবীর মিত্র ‘প্রবীণ’ হয়ে গেছেন। দীর্ঘদিন নেই ক্যামেরার সামনে। তাই তো এই অভিনেতার খবর চোখে মেলে না খুব একটা। সবশেষ এই অভিনেতা খবরের শিরোনামে এসেছিলেন, গেল জুলাইয়ে ৭৯ বছর বয়সে করোনা ভাইরাস জয় করে।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ খ্যাত প্রবীর মিত্রের খবর নিতে গিয়ে জানা গেল, বর্তমানে হাঁটুর ব্যথায় কাবু আর কানেও কম শোনেন এই অভিনেতা।

এনটিভি অনলাইনকে প্রবীর মিত্রের বর্তমান শারীরিক অবস্থা জানিয়েছেন পুত্রবধূ সোনিয়া ইয়াসমিন, ‘উনার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তবে হাঁটুতে প্রচণ্ড ব্যথা আছে। লাঠি ব্যবহার করে বাথরুম পর্যন্ত যেতে পারেন। বেশি হাঁটাচলা করেন না। এ ছাড়া শীত এলে উনার একটু বেশি সমস্যা হয়, উনি শীতে কাবু হয়ে যান। এ ছাড়া এখন উনি একটু কানেও কম শোনেন, থেমে থেমে জোরে কথা বলতে হয়।’

প্রায় চার দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৪০০-এর বেশি সিনেমায় অভিনয় করা প্রবীর মিত্র অসুস্থ হওয়ার পর থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বড় ছেলের সঙ্গে বসবাস করেন। কীভাবে এই অভিনেতার অবসর কাটে এমন প্রশ্নে পুত্রবধূ জানিয়েছেন, ‘উনি বই পড়েন, পত্রিকা পড়েন। হঠাত মাঝে মাঝে ছুটির দিনে আমাদের সঙ্গে টিভি দেখেন।’

ঢাকাই সিনেমার কেউ এই অভিনেতার খবর রাখেন কি না, এমন প্রশ্নে সোনিয়া ইয়াসমিন বলেন, ‘বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিল্পী সমিতি থেকে প্রতিনিধি এসে কিছু উপহার দিয়ে যান। এই...।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তাঁর। অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।

এর আগে এনটিভি অনলাইনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবীর মিত্র জীবনের প্রাপ্তির গল্পে বলেছিলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা-শ্রদ্ধা পেয়েছি। এটাই আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। এ ছাড়া জীবনে তেমন কিছু আমি করতে পারিনি।’