সত্য ও জ্ঞানের পথ না পেয়ে শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মলয় কুমার ভৌমিক বলেছেন, ‘যত আন্দোলন হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগের দিনে তার নেতৃত্ব দিয়েছে। তবে এখন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রতিও ঝুঁকে পড়তে দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের। তার কারণ আমাদের জ্ঞানচর্চার মধ্যে ফাঁক আছে। আমরা তাদের সত্য ও জ্ঞানের পথ দেখাতে পারছি না।’
২০০৭ সালের আগস্টে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে আজ বুধবার এক সভায় মলয় ভৌমিক এসব কথা বলেন। ওই সময়ের আন্দোলনে রাবির আট শিক্ষক ও এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে মলয় ভৌমিকও ছিলেন। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত হয়।
রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সমাবেশে মলয় ভৌমিক আরো বলেন, ২০০৭ সালের ২৪ আগস্টে রাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ন্যায়ের পক্ষে আন্দোলনে নেমেছিল। অন্যায়কে প্রতিহত করেছিল। অন্যায়কারী যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন, ত্যাগী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিগত সময়ের মতো এখনো তা প্রতিহত করতে সক্ষম।
এ সময় রাবির এ শিক্ষক বর্তমান প্রশাসনের কাছে সেই সময়ে হওয়া হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-ছাত্রদের সঙ্গে সেনাসদস্যদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অনেক ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
এর পর থেকে প্রতিবছর ২৪ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন’ দিবস পালন করা হয়।
দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, প্রগতিশীল শিক্ষকসমাজ পৃথক শোভাযাত্রা, সমাবেশ, মানববন্ধন ও সভার আয়োজন করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নির্যাতিত শিক্ষক অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস।
ওই সময়ে নির্যাতিত ও শিক্ষক বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ঘটনা একটি বড় ষড়যন্ত্র। ওই ঘটনার ইতিহাস বিকৃতিরোধে একটি কমিশন গঠন এবং পূর্বাপর উদ্ঘাটন করে তার প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিও জানান তিনি।
আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নির্যাতিত শিক্ষার্থী বর্তমানে রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন, নির্যাতিত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।