রাবির নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিল আওয়ামী লীগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একটি নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইআর) শুরু হওয়া নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. আনসার উদ্দীন বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে একজন আয়া ও আরেকজন মালি নিয়োগের জন্য মৌখিক পরীক্ষা ছিল আজ। যথারীতি পরীক্ষা আমরা নেওয়াও শুরু করে দেই। কিন্তু সকালে সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগের ২০ থেকে ২৫ জন লোক এসে বলে, ‘পরীক্ষা নিতে পারবেন না।’ সে সময় আমরা বলি, দেখেন যোগ্য লোক নিয়োগ দেই কি না। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনে না। তাদের সঙ্গে তো আমরা ঝগড়া করতে পারি না। পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ না করলে অন্যরকম পরিস্থিতির তৈরি হতো। তাই অমি বন্ধ করে দিয়েছি।”
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া আগে যেটা ছিল, সেখানে বয়সের কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন বসয়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩০ বছর। আমরা অনেক দিন থেকে বলছিলাম বয়সের এই নিয়মটা যেন তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা না শুনে একের পর এক নিয়োগ দিয়েই যাচ্ছে। এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে আজকে সকালে মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। গিয়ে তারা বয়সের বাঁধ তুলে দিয়ে আগের নিয়মে নিয়োগের দাবি জানায়।’
‘এই নিয়োগ পরীক্ষায় আয়ার যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে মেট্রিক পাস। আয়া পানি, চা আনা-নেওয়া করবে। তার এত যোগ্যতা লাগবে কেন? আবার কম্পিউটার চালানোর যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে। এ যোগ্যতা চাইলে তো আমাদের সংগঠনের কেউ চাকরি পাবে না। যাই হোক, তারা এ দাবি তুলে দেওয়ার দাবি জানায়। তাদের এ দাবির মুখে আজকের সকালে যে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল, তা বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। পরে আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এসেছি, যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘ইনস্টিটিউট তো নিজস্ব প্রক্রিয়াতে নিয়োগের বিষয়টি দেখে। সেখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও এখন ক্যাম্পাসে নেই। এখন আইইআর যদি লিখিতভাবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে থাকে, তখন আমি বিষয়টি দেখতে পারব এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারব।’
‘তবে এখনো তারা লিখিতভাবে জানিয়েছে কি না তা আমি আপাতত বলতে পারছি না। জানালে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’