দুই সপ্তাহ ধরে ‘অচল’ রুয়েট
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে দুই সপ্তাহ ধরে চলা ‘অচলাবস্থা’ কাটার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আসছেন। আজ শনিবার সকালে আবারও রুয়েটের শিক্ষক সমিতির এক জরুরি সাধারণ সভায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩৩ ক্রেডিট বাতিলের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলন করে রুয়েটের ২০১৪ ও ২০১৫ সিরিজের শিক্ষার্থীরা। তবে অন্য সিরিজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক ছিল। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপাচার্যসহ প্রায় ২০ শিক্ষককে আবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতিতে ৫ ফেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে ৩৩ ক্রেডিট পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন। এরপরই ওইদিন দুপুর ২টার দিকে রুয়েটের শিক্ষক সমিতি জরুরি এক সাধারণ সভায় আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়।
রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল আলীম আজ বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আজকের সভায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে স্থির রয়েছি। আগামী শনিবার আবার সভা করবো। এর মধ্যে পরিস্থিতি দেখব। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর আগের গঠিত তদন্ত কাজ করে যেন দ্রুত প্রতিবেদন দেয় সে বিষয়টিও দেখবে মনিটরিং কমিটি।’
অধ্যাপক আব্দুল আলীম আরোবলেন, ‘আন্দোলন করেছে দুই সিরিজের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এর ফল ভোগ করছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিষয়টি আমরা সভায় উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু সাধারণ শিক্ষকদের দাবির মুখে আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি। ফেসবুকে শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যই শিক্ষকদের ক্ষোভের কারণ। আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো অনুতাপ নেই। তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা ক্লাসে ফিরে যেতে চান। আন্দোলনের সময় অনেক কিছুই হয়। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদেরও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। আবার কিছু শিক্ষার্থীও হয়তো কিছু ভুল করে থাকতে পারে। তাই বলে তো পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এর ফল ভোগ করতে পারে না।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, তারপরও তাঁরা শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আজকেও ক্লাসের সিআরসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থী শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তাদের আশা, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ক্ষমা করে দিয়ে ক্লাসে ফিরে আসবেন।