তিন লাখ টাকার চুক্তিতে বদলি পরীক্ষা, দুই ছাত্রের কারাদণ্ড
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে তিন ছাত্রকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ সোমবার পরীক্ষা চলার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক হওয়া ছাত্রদের একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। অন্য দুজনের একজন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যজন নোয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্র।
তবে আটকদের মধ্যে একজনকে খালাস দিয়ে অন্য দুজনকে এক মাসের করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের (গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ওই তিনজনকে আটক করা হয়।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান রাজ্জাক ‘এ’ ইউনিটে মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থীর বদলে পরীক্ষা দেওয়ার চুক্তি করেন। চুক্তি অনুসারে রাজ্জাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ৪০৫ নদ্বর রুমে বদলি (প্রক্সি) পরীক্ষা দিতে আসেন। এ সময় প্রবেশপত্রের সঙ্গে ছবির মিল না পাওয়ায় শিক্ষকরা তাঁকে আটক করেন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল ইসলাম সালমান ও তাঁর বন্ধু নোয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্র আবদুল্লাহ আল নোমানকে আটক করে প্রশাসন।
আটক হওয়ার পর রাজ্জাক ও মোহাইমিন উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেন।
রাজ্জাক প্রক্সি দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি আমার বন্ধু মোহাইমিনের কথায় পরীক্ষা দিতে এসেছি। ও বলেছিল এখানে পরীক্ষা দিতে কোনো সমস্যা নাই, চেক করা হয় না।’
এ বিষয়ে মোহাইমিন বলেন, ‘আমি আমার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু সারোয়ারের ছোট ভাইয়ের হয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কামরুজ্জামান রাজ্জাকের সঙ্গে তিন লাখ টাকার চুক্তির করি। বাকি সব কথাবার্তা তাদের মধ্যে হয়েছে, আমি কিছু জানি না।’
এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'আটককৃত রাজ্জাক ও মোহাইমিন তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে আমাদের কাছে। প্রক্সি দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার চুক্তি হয় তাদের মাঝে। নোমান নামে যাকে আটক করা হয়েছে, সে এ দুজনকে সহায়তা করছিল। তাদেরকে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রশাসন তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন ওই তিনজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হস্তান্তর করার কথা জানান।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণব কুমার ঘোষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোহাইমিন ও কুয়েটের ছাত্র রাজ্জাককে এক মাসের করে কারাদণ্ড দেন। নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমানকে খালাস দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।