আকামা বা কাজের অনুমতিপত্র
বাংলাদেশ থেকে বিশাল সংখ্যক মানুষ দেশের বাইরে যান কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য। এই কাজ করার জন্য তাঁদের ওই দেশের অনুমতিপত্র বা ওয়ার্কপারমিটের দরকার হয়। এই অনুমতিপত্রের নাম একেক দেশে একেক রকম। কোনো দেশে এটি ওয়ার্কপারমিট, কোথাও আকামা (সৌদি আরব), আবার কোথাও একে পতাকা (সংযুক্ত আরব আমিরাত) নামে ডাকা করা হয়।
এখন কোনো কারণে এই কাজের অনুমতিপত্র যদি হারিয়ে যায়, তাহলেই আপনাকে বিপদে পড়তে হবে। তাই বিদেশে যাওয়া শ্রমিকদের এ ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকা জরুরি। তবে যদি অনুমতিপত্রটি হারিয়েই ফেলেন, তাহলে কী করবেন—তা নিয়েই আমাদের আজকের এ আয়োজন।
বাংলাদেশের যেসব শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করেন, তাঁরা জানেন, কোম্পানির কাছ থেকে আকামা সরবরাহ করার পরই ওই দেশের ভিসা পাওয়া যায়। এর আগে নয়। বিদেশে যাওয়ার পর তাই আকামা সাবধানে রাখা খুব জরুরি। কোনো কারণে আকামা হারিয়ে গেলে ওই দেশে কাজ করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। আর যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নাজেহাল হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।তাই আকামা হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মালিকের কাছে অভিযোগ করতে হবে। মালিক নিজেই আকামার ব্যবস্থা করে দেবেন। এ পদ্ধতি অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
এ ছাড়া পেশা পরিবর্তন করতে চাইলেও নতুন করে অনুমতিপত্রের প্রয়োজন পড়ে। যেমন—কোনো শ্রমিক যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স করে গাড়ি চালাতে চান, তখন তাঁকে নতুন করে ওই কাজের জন্য অনুমতিপত্রের দরকার হয়।
আকামা না থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো সময় আপনাকে গ্রেফতার করতে পারে। ২০০৯ সাল থেকে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশিদের জন্য আকামা বন্ধ ছিল। এ সময় যাঁদের আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাঁরা বিপাকে পড়েন। কেননা, ওই দেশের সরকার আকামার মেয়াদ বৃদ্ধি করেনি। সম্প্রতি আবারও আকামার অনুমতি মিলছে । আকামার মেয়াদ আগে এক বছর থাকলেও বর্তমানে তা পাঁচ বছর করা হয়েছে।
এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজের অনুমতিপত্রকে বলা হয় পতাকা। সংশ্লিষ্ট মালিকের মাধ্যমে এই পতাকা নিতে হয়। কোনো কারণে পতাকা হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে মালিককে অবহিত করতে হবে। অন্যথায় আপনি কাজ করতে পারবেন না। অনুমতিপত্র ছাড়া কাজ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো সময় আপনাকে গ্রেফতার করতে পারে। এ ছাড়া আপনি যদি কোনো মালিকের অধীনে চাকরি না করে ফ্রি ভিসায় কাজ করেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসকের মাধ্যমে আপনাকে এই পতাকা বা কাজের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে। কোনো কারণে আপনি যদি সমস্যায় পড়েন, তাহলে আপনার পাসপোর্টসহ বাংলাদেশের দূতাবাসে সরাসরি যোগাযোগ করে তাঁদের সহযোগিতা নিতে পারেন।