অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে বড়পুকুরিয়ার শ্রমিকরা
১৩ দফা দাবিতে দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছে।
আজ রোববার সকাল থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে খনির ফটকের সামনে অবস্থান নেয়।
উৎসবের ছুটির মধ্যে কাজ করলে প্রাপ্য মজুরি প্রদান, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে একই সার্কুলার প্রকাশ, আউট সোর্সিং শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ, লভ্যাংশ ও অন্যান্য বোনাসসহ বৈশাখী ভাতা প্রদান, নিয়মানুযায়ী ওভার টাইমের টাকা প্রদান, মাটির নিচে কাজ করা শ্রমিকদের ছয় ঘণ্টা করে কাজ করানোসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠায় শ্রমিকরা।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর গত ২৬ এপ্রিল ১৩ দফা দাবিতে একটি চিঠি পাঠানো হয়। গতকাল ১২ মে পর্যন্ত দাবি মানার শেষ দিন ছিল। কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিসহ অবস্থান নিয়েছে খনি শ্রমিকরা।
এই শ্রমিক নেতা আরো বলেন, ‘আজকে দীর্ঘ নয় মাস হচ্ছে আমাদের এই ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন হয় নাই এবং এই দাবির জন্য আমরা আমাদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের কাছে গিয়েছিলাম, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে গিয়েছিলাম। সবাই ইতিবাচকভাবে আমাদের আশ্বাস প্রদান করে যে, দাবি বাস্তবায়ন হবে এবং সে বিষয়ে এমডি স্যারকে বলা পরও আজ পর্যন্ত দাবি বাস্তবায়ন করে নাই। এজন্য আমাদের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক ভাইয়েরা যারা এই মাটির নিচে কাজ করছে আমাদের এক হাঁটু গরম পানির সঙ্গে লড়া্ই করতে হচ্ছে এবং আমাদের কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় আমাদের শ্রমিক ভাইরা কাজ করছে। আমাদের শ্রমিকদের এই ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন হয় নাই, আমরা আজ সকাল ৬টা ১ মিনিট থেকে কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ রকম কর্মবিরতি চলবে।’
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এখানকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক যারা আছে তারা শ্রমিকের এই অর্থ, এই চাওয়া পাওয়া শোষণ করছে। এ জন্য শ্রমিকরা আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। একপর্যায়ে শ্রমিকের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতেই শ্রমিকরা এই মাঠে অবস্থান করছে, এই রাজপথে নেমে এসেছে তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। এই অধিকার, এই ন্যায্য পাওনা যতক্ষণ পর্যন্ত ফিরিয়ে দেওয়া না হবে, যতক্ষণ আমাদের মাঝে ঘোষণা দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন, এই অবরোধ চলবে এবং চলতে থাকবে।’