মন্থর হয়ে পড়ছে ওয়েবপেজ
দিনে দিনে বাড়ছে ইন্টারনেটের স্পিড, একই সঙ্গে বাড়ছে ওয়েবসাইটের সংখ্যা। কিন্তু আয়তনে কিংবা বিষয়বস্তুতে ক্রমশ বৃহদাকার হচ্ছে এক একটি ওয়েবপেজ। আর এ রকম কিছু কারণেই ধীরগতিতে খুলছে বেশির ভাগ ওয়েবপেজ! সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এমন তথ্য।
এইচটিটিপি আর্কাইভ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানের একটি ওয়েবপেজের আকার গড়ে ২.৫ মেগাবাইট। তিন বছর আগে এই আকার ছিল প্রায় দ্বিগুণ কম। কিন্তু এই আকার বৃদ্ধির রহস্য কী?
বেশ কয়েকটি কারণে ওয়েবপেজ ভারী হয়ে পড়ছে। অনেক বেশি ভিডিও, হাই রেজ্যুলুশনের ছবি কিংবা মন্তব্য জানানোর জন্য প্লাগ-ইনের ব্যবহার বৃদ্ধি করছে পেজের কলেবর।
একই সঙ্গে ওয়েব ডেভেলপাররা ওয়েবপেজে জুড়ে দিচ্ছেন ট্র্যাকিং কিংবা ডাটা বিশ্লেষণের টুল। এই তথ্য তাঁদের ওয়েবসাইট ভিজিটর সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা দিচ্ছে বটে, কিন্তু মন্থর করে দিচ্ছে ওয়েবপেজকে। তাই ওয়েবপেজ খুলতে সময় লাগছে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে ভিডিও এবং ছবিই এই ধীরগতির ক্ষেত্রে দায়ী। কোনো ওয়েবপেজের তিন-চতুর্থাংশ জায়গা দখল করে নিচ্ছে এ ধরনের সব ফাইল।
স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা স্মার্টওয়াচের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে ওয়েব ডেভেলপারদের ভাবতে হচ্ছে এসব গেজেট উপযোগী ওয়েবপেজ নিয়ে। একই ছবির বিভিন্ন রেজ্যুলেশন কিংবা ফাইলের ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণের কথা বিবেচনা করতে হচ্ছে তাদের।
দেখা গেছে, কিছু ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ডিভাইস ভেদে একই ছবির প্রায় ৫০ রকমের সাইজ যুক্ত করা আছে। ওয়েব ডিজাইনারদের এ ক্ষেত্রে জটিল কিছু কোডিংয়ের কাজ সারতে হয়, এতে বেড়ে যায় পেজের আকার।
প্রযুক্তি দুনিয়ায় এখন নিরাপত্তার ব্যাপারে বেশ সচেতন সবাই। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাজাতে হচ্ছে ওয়েবসাইটগুলো। ব্যবহারকারীদের তথ্য নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলতে খরচ করতে হচ্ছে বাইটের পর বাইট। ফন্টের ব্যাপারেও নতুনত্ব আনতে চাইছে বেশির ভাগ ওয়েবসাইট।
তিন বছর আগে যেখানে কোনো ওয়েবপেজের মোট আকারের মাত্র ১% জায়গা ফন্টের দখলে থাকত, এখন তার পরিমাণ ৫%। একই সঙ্গে দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ব্রাউজার, ব্রাউজারে একই সঙ্গে অনেক ট্যাব চালানো-এসব বিষয়ও সাইটের গতি কমিয়ে ফেলছে।
সামগ্রিকভাবে মন্থর হয়ে পড়ছে ওয়েব দুনিয়া। ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন সাইটের আকার। তবে এই ধীরগতিই বিরক্তির কারণ হয়ে পড়তে পারে ওয়েবপেজে ঢুঁ মারা পাঠকদের কাছে।