হিলিতে বিজিবির সুবেদারের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সিপি বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ইলিয়াস মিয়ার বিরুদ্ধে একটি পরিবারের নারী-পুরুষকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার রাতে সীমান্তবর্তী ধরন্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত মিনারা বেগম (৬০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত মিনারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘গত বুধবার রাত ৮টার দিকে আমার ছেলে মিঠু হোসেন (২৫) তার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিল। বাড়িতে ঢুকতে গেলে হিলি সিপি ক্যাম্পের কয়েকজন বিজিবি সদস্য দৌড়ে এসে কোনো কারণ ছাড়াই তাকে গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে সে প্রতিবাদ করলে তাকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন এবং গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ সময় ছেলের চিৎকার শুনে আমার স্বামী ইসকেন্দার বাড়ি থেকে বের হয়ে মারার কারণ জানতে চান। এই কথা বলতেই তাঁকেও লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আমার বড় ছেলে ও ভাতিজা নূর আলমকেও মারধর করেন। তখন আমি আমার স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে যাই। কিছু পর হিলি সিপি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ইলিয়াস মিয়া এসে আমার বাড়ির দরজায় লাথি মেরে ভিতরে ঢুকে লাঠি দিয়ে আমার ছেলের বউকে আঘাত করেন। এরপর তিনি আমাকেও এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করলে আমি ডান হাতে আঘাত পেয়ে আহত হই। পরে আমাকে ওই রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
মিনারা বেগমের স্বামী ইসকেন্দার আলী বলেন, ‘কেন বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার ও তাঁর লোকজনরা অন্যায়ভাবে আমাদের মারল? আমি এই মারধরের বিচার চাই। ঘটনাটি পৌর মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে জানিয়েছি। থানায় ফোন দিলে পুলিশও এসেছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি এর কোনো প্রতিকার পাইনি। আমি, আমার ছেলেরা হিলি বন্দরে শ্রমিকের কাজ করি। আমরা চোরাচালানে জড়িত নই।’
পৌরসভার ধরন্দা ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ওই রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বাড়িতে ঢুকে মারধরের ঘটনায় বিজিবির কোম্পানি কমান্ডারের কাছে প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, এটা আপনারা ঠিক করেননি।’
এ বিষয়ে পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, ‘ঘটনাটি আমি উভয়পক্ষের কাছ থেকে শুনেছি। তারা তাদের মতো করে বলছে। তবে তাদের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
জানতে চাইলে হিলি সিপি বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘হিলি সিপি ক্যাম্পের অধীনে সীমান্তের ১১ ও ১২ নম্বর পোস্টে বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিল। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে ইসকেন্দারের ছেলে মিঠু টর্চ লাইটের আলো মারে। এমনকি ইট-পাটকেলও ছুঁড়ে মারে। এ জন্য তার সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয়। এ কারণে আমি তাকে মারধর করেছি। তবে বাড়িতে ঢুকে মারিনি।’
এদিকে, জয়পুরহাট ২০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস হাসান বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে মাদক চোলাচালান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চোরাকারবারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ কারণে তারা বিজিবির ওপর ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মেরে মাদক পাচারের নতুন কৌশল করছিল। সেখানে মারধর করা হয়েছে কি না, এটা আমার জানা নেই।’