নিখোঁজের সাতদিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ, পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় নিখোঁজের সাতদিন পর আজিজুল ইসলাম সরকার বাপ্পী (২২) নামের এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া বুড়িদোলা এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে গতকাল রোববার দুপুরে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আজিজুল ইসলাম মন্মথপুর ইউনিয়নের রাজাবাসর বানিয়াপাড়া গ্রামে। তিনি রাজমিস্ত্রি ও ভ্যানচালক ছিলেন।
জানা গেছে, গতকাল দুপুরে চৈতাপাড়া বুড়িদোলা এলাকার জাহাঙ্গীর আলম ও মনসুর আলীর ধানক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করতে গেলে একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আজিজুলের স্ত্রী, মা ও পরিবারের লোকজন প্যান্ট ও বেল্ট দেখে লাশটি শনাক্ত করেন।
পরিবারের অভিযোগ, স্বপন কুমার রায় (৩২) নামের স্থানীয় এক নির্মাণ ঠিকাদারের কাছ থেকে পারিশ্রমিক পেতেন স্বপন। পারিশ্রমিকের অর্থ না দেওয়ায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর স্বপনের সঙ্গে আজিজুলের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় আজিজুলকে প্রাণনাশের হুমকি দেন স্বপন। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি আজিজুল।
নিহত আজিজুলের বাবা আতাউর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, আজিজুল নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে দায়িত্বশীলরা অভিযোগ গ্রহণ না করে নিজ উদ্যোগে খোঁজার পরামর্শ দিয়ে বিদায় করেন। কোনো কোনো কর্মকর্তা বলেন, আজিজুলের মস্তিষ্ক বিকৃতি উল্লেখ করে অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ করা হবে। তাঁদের এমন কথার পর থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। এরপর গত ২ সেপ্টেম্বর আজিজুলের ভ্যানটি রাস্তায় পাওয়া গেলে ২৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করে। পরে গতকাল স্থানীয়দের চোখে পড়লে আজিজুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরই মধ্যে গতকাল রোববার বিকেল ৫টার দিকে আজিজুলের পরিবারসহ দুই শতাধিক মানুষ থানা ক্যাম্পাসের ভেতরে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ডের অভিযোগে প্রতিবাদ করেন।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ সত্য নয়। তাঁরা ২৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরি করতে এলে আমরা তা গ্রহণ করি। থানার সব পুলিশ সদস্য আজিজুলকে খুঁজতে মাঠে কাজ করেছে। এ ছাড়া সব থানায় ম্যাসেজও পাঠানো হয়েছিল।’
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আজিজুলের বাবা আতাউর রহমানকে বাদী করে ও ঠিকাদার স্বপন কুমার রায়কে আসামি দেখিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে মোখলেছুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।