কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা, এএসআই আটক
কুষ্টিয়া শহরে দিনেদুপুরে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী, স্ত্রীর ছেলেসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের কাস্টমস মোড় এলাকার একটি মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ওই এএসআইয়ের নাম সৌমেন রায়। বর্তমানে তিনি খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত। এর আগে তিনি কুষ্টিয়ায় দায়িত্ব পালন করেছেন। পুলিশ অস্ত্রসহ এএসআই সৌমেন রায়কে আটক করেছে।
নিহত তিনজন হলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাঁওতা গ্রামের বিকাশকর্মী শাকিল খান (৩৫), আসমা খাতুন (৩০) ও তাঁর ছেলে রবিন (৬)। নিহত আসমা এএসআই সৌমেনের দ্বিতীয় স্ত্রী। দেড় বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড়ে একটি ভবন থেকে প্রথমে শিশু রবিন বের হলে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা এএসআই সৌমেন শিশুটির মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। এরপর তার মা আসমা খাতুন ও পরে তাদের সঙ্গে থাকা শাকিল নামের এক যুবককেও গুলি করেন সৌমেন। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এসে সৌমেনকে ধাওয়া করলে এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন সৌমেন। সৌমেন দৌড়ে তিনতলা ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন।
এরপর লোকজন জড়ো হয়ে ওই ভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসমাকে মৃত ঘোষণা করেন। অস্ত্রোপচারকক্ষে গুলিবিদ্ধ শাকিল ও শিশু রবিনের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে পুলিশ ওই ভবন থেকে অস্ত্রসহ এএসআই সৌমেনকে আটক করে নিয়ে যায়।
তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম জানান, সৌমেন রায় পুলিশের এএসআই। বর্তমানে তিনি খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত। এর আগে তিনি কুষ্টিয়ায় চাকরি করেছেন। পরকীয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
এই ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে খুলনা পুলিশ অবগত হয়েছে। এটা একটি ঘৃণিত অপরাধ। এ ঘটনায় পুলিশ কোনো গড়িমসি করবে না। হত্যাকারী এএসআই সৌমেন রায়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, আটক সৌমেন রায় ফুলতলা থানার এএসআই। আজ সকাল থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি ছুটি না নিয়ে আনঅফিশিয়ালভাবে চলে কুষ্টিয়ায় গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।