গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ-এর পাঁচ ঘাটতি
স্মার্টফোন জগতে স্যামসাং গ্যালাক্সির এস সিরিজ শক্তিশালী একটি নাম। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসেছে এই সিরিজের দুটি ফ্ল্যাগশিপ।
গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ মডেলের এরই মধ্যে বেশ সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য কারণও রয়েছে। মাইক্রোএসডি কার্ডের স্লট এবং পানিরোধকের মতো সুবিধাগুলো ফিরিয়ে আনা হয়েছে এ দুই স্মার্টফোনে। কিন্তু এর পরও সেটটিতে অভাব রয়ে গেছে কিছু ফিচারের।
ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণের একটি প্রতিবেদনে খুঁজে বের করা হয়েছে এমন পাঁচটি ফিচার, যেগুলোর অভাবে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ হয়তো বাজার মাত করতে কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকবে।
আই স্ক্যানার
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ২০১৫ সালে মানানসই হলেও ২০১৬ সালে স্যামসাংয়ের থেকে আরেকটু আধুনিক কোনো প্রযুক্তি আশা করা হয়েছিল। কোরিয়ান এই টেক জায়ান্ট এবারও ক্রেতাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েই সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা হয়তো জানে না, এখন কুলপ্যাড নোট থ্রির মতো সস্তা হ্যান্ডসেটেও পাওয়া যাচ্ছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট!
অন্যদিকে স্যামসাংয়ের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীরা কিন্তু থেমে নেই। জেডটিই কিংবা মাইক্রোসফটের হ্যান্ডসেটগুলোতে এরই মধ্যে আই স্ক্যানার যোগ করা হয়েছে। এমনকি এ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে স্মার্টফোন জগতে স্যামসাংয়ের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপল। তাই স্যামসাং কিছুটা হলেও পিছিয়ে গেছে তাদের ফ্ল্যাগশিপে আই স্ক্যানার না নিয়ে আসার কারণে।
নতুন ডিসপ্লে
মোবাইলের ডিসপ্লেতেও ২০১৫ সালে পড়ে আছে স্যামসাং। গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ-এর কিউএইচডি রেজ্যুলেশন ডিসপ্লের মানের দিক থেকে অনেকটাই তাদের আগের ফ্ল্যাগশিপের মতো। এদিক থেকেও তারা তেমন কোনো উন্নতিই আনতে পারেনি বলা যায়। অন্যদিকে অ্যাপল তাদের হ্যান্ডসেটের জন্য তৈরি করে ফেলেছে থ্রিডি টাচ ডিসপ্লে।
ইউএসবি টাইপ সি
দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সফার এবং চার্জিংয়ের জন্য দুনিয়ার সবাই এখন ছুটছে ইউএসবি টাইপ সি-এর পেছনে। ওয়ান প্লাস, শাওমি থেকে শুরু করে মাইক্রোসফট পর্যন্ত ইউএসবি টাইপ সি-কে বেছে নিয়েছে তাদের ফোনের জন্য। আর ২০১৬-তে এসেও স্যামসাং পড়ে আছে মাইক্রো ইউএসবি নিয়ে। গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ উভয় হ্যান্ডসেটেই ‘কুইক-চার্জিং’-এর ব্যবস্থা রাখা হলেও ইউএসবি টাইপ সি-এর অনেক সুবিধা থেকেই বঞ্চিত হতে হবে।
ফ্রন্ট ফ্ল্যাশ
সেলফি যুগে এসে স্মার্টফোন নির্মাতারা শুধু রিয়ার ক্যামেরা নিয়েই চিন্তিত নন। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য যেমন উন্নত করা হচ্ছে ফ্রন্ট ক্যামেরা, তেমনি ভালো সেলফি তোলার সব সুবিধাই যোগ করা হচ্ছে। অথচ স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজে নেই কোনো ফ্রন্ট ফ্ল্যাশ, যা অনেক সস্তা হ্যান্ডসেটগুলোতেও থাকে আজকাল। তাই স্মার্টফোন হ্যান্ডসেটগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও স্যামসাংয়ের ফ্ল্যাগশিপ দুটি ব্যর্থ হতে পারে সেলফিপ্রেমীদের মন জয় করতে।
আধুনিক বডি
গ্লাস এবং মেটাল অনেক প্রচলিত হলেও স্যামসাংয়ের নতুন ফ্ল্যাগশিপ দুটির বডি তৈরিতে এবার তেমন কোনো নতুনত্ব পাওয়া যায়নি। বলা যায়, অনেকটা আগের বছরের ডিজাইন নিয়েই আবার এ বছর হাজির হয়েছে কোরিয়ান এই টেক জায়ান্ট। অন্যদিকে অন্য স্মার্টফোন নির্মাতারা তাদের হ্যান্ডসেটের বডি তৈরিতে নতুন নতুন উপাদান যোগ করছে। সিরামিক, চামড়া কিংবা কাঠের তৈরি বডিও দেখা যাচ্ছে আজকালকার হ্যান্ডসেটগুলোতে।
যাঁরা এরই মধ্যে মনস্থির করে ফেলেছেন স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ কিংবা এস৭ এজ কিনবেনই, তাঁরা আবার মন খারাপ করে ফেলবেন না ওপরের কারণগুলো পড়ে। কারণ, এই পাঁচটি জিনিস না থাকা সত্ত্বেও স্যামসাংয়ের ফ্ল্যাগশিপ দুটিতে রয়েছে অগণিত চমৎকার সব ফিচার। এই দুর্বলতাগুলো থাকলেও স্যামসাং এস৭ এবং এস৭ এজ-এর আবেদন খুব একটা কমবে না। আর ওপরের ফিচারগুলো অভাবে আপনি স্মার্টফোন ব্যবহারে খুব একটা অসুবিধায় পড়বেন না।
তবে ২০১৬-তে এসে আপনি যদি আধুনিকতার প্রায় সব রকম ছোঁয়াই পেতে চান, তাহলে গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ কেনার আগে আরেকবার ভেবে নিন। কারণ, প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে একটি হ্যান্ডসেট কেনার পর আপনি কোনো আফসোস রাখতে চাইবেন না।