শক্তি সাশ্রয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেবে গুগল
কয়েক বছর আগে যখন গুগলের ডাটা সার্ভারে বিদ্যুৎ ব্যবহারের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ পায়, তখন বেশ আলোচনার ঝড় উঠেছিল সেই রিপোর্ট নিয়ে। শক্তি খরচের দিক থেকে প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ ওপরের দিকে থাকার কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল গুগলকে।
টেক জায়ান্ট গুগল সে সমালোচনাকে যে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিল, তার প্রমাণ মিলছে তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে। শক্তি সাশ্রয়ে এবার তারা সাহায্য নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে এ খবর।
‘ডিপমাইন্ড’ নামের গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগ ‘মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম’ ব্যবহারের ফলে ডাটা সেন্টারের শক্তি ব্যবহার ১৫ শতাংশ হ্রাস করেছে। সারা পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ প্রতিমুহূর্তে সাহায্য নিচ্ছে গুগলের। এই বিশাল সংখ্যক ব্যবহারকারীর ডাটাকে প্রক্রিয়া এবং সংরক্ষণে কাজ করে ডাটা সেন্টার। আর গুগলের বিশালায়তন ডাটা সার্ভারকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সচল রাখতে খরচ হয় প্রচুর বিদ্যুৎ শক্তির।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর মোট গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রায় ২ শতাংশ নির্গত হয় এ রকম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডাটা সার্ভার থেকে।
বিভিন্ন সেন্সরের সাহায্যে ডাটা সেন্টারের নির্দিষ্ট অংশের তাপমাত্রা এবং শক্তির তথ্য নিয়ে ডিপমাইন্ডের জেনারেল পারপাস অ্যালগরিদম তৎক্ষণাৎ শক্তিসাশ্রয়ী একটি অনন্য ব্যবস্থা চালু করবে প্রতিটি সার্ভারের জন্য। ডিপমাইন্ড থেকে জানানো হয়েছে, এ ব্যবস্থা সার্ভারকে ঠান্ডা রাখার খরচ কমাবে ৪০ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ শক্তি সাশ্রয় করবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই ব্যবহারের ফলে যে পরিবেশগতভাবেও একটি প্রভাব পড়বে, সে সম্পর্কে জানিয়েছেন ডিপমাইন্ডের সহপ্রতিষ্ঠাতা মুস্তফা সুলাইমান। তাঁর ভাষায়, ‘পরিবেশগত দিক থেকে এটি একটি বড় প্রভাব ফেলবে।’
এ বছরের শেষ দিকে গুগল তাদের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ডাটা সেন্টার ব্যবহার করবে ডিপমাইন্ডের প্রযুক্তি। শুধু তাই নয়, গুগল ছাড়াও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ডাটা সেন্টারে কাজ করবে ডিপমাইন্ড।
তবে গুগল তাদের ডাটা সেন্টারগুলোতে শক্তি খরচের ব্যাপারে এর আগেও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল, যার প্রমাণ মিলেছে ২০১৫ সালের গ্রিনপিসের প্রতিবেদনে। সেখানে নবায়নযোগ্য শক্তিমাধ্যম ব্যবহারের জন্য গুগলের বেশ প্রশংসা করা হয়েছিল।