দুই নারী অধিকারকর্মীকে মুক্তি দিল সৌদি আরব
প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন সৌদি আরবের নারী অধিকারকর্মী সামার বাদাউয়ি ও নাসিমা আল-সাদাহ। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এএলকিউএসটি টুইটার বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।
এএলকিউএসটি গতকাল রোববার এক টুইটে বলেছে, ‘মানবাধিকারকর্মী সামার বাদাউয়ি ও নাসিমা আল-সাদাহ তাঁদের বিরুদ্ধে দেওয়া দণ্ডাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন।’
সামার বাদাউয়ি ও নাসিমার বিরুদ্ধে বিদেশি শক্তির সঙ্গে আঁতাত ও বিদেশিদের অর্থে আন্দোলন পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৮ সালের আগস্টে আটক করা হয়েছিল বাদাউয়ি ও নাসিমাকে। সৌদি আরবের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ওই সময় তাঁদের সঙ্গে আরও কয়েকজন অধিকারকর্মীকে আটক করা হয়েছিল।
বাদাউয়ি সৌদি আরবের পুরোনো অভিভাবক আইন চ্যালেঞ্জ করে আলোচনায় এসেছিলেন। নারীদের ভোট দেওয়া, গাড়ি চালানো ও স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার চেয়ে পিটিশনে সই করেছিলেন তিনি। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইম্যান অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন বাদাউয়ি। তাঁর বোন রাফি বাদাউয়িও একজন খ্যাতনামা মানবাধিকারকর্মী। ২০১৪ সালে ১০ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন রাফি।
অন্যদিকে নাসিমা শিয়া অধ্যুষিত কাতিফ প্রদেশের বাসিন্দা। তিনিও পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন। ২০১৫ সালে স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় নাম লিখিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন নাসিমা। তবে ভোটের আগেই প্রার্থী তালিকা থেকে তাঁর নাম কেটে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
২০১৮ সালে এই দুজন ছাড়াও ইমান আল-নাফজান, লুজাইন আল-হাতলুল, আজিজা আল-ইউসুফ, আয়েশা আল-মানেয়া, মোহাম্মদ আল-রাবেয়াসহ আরও কয়েকজন নারী অধিকারকর্মীকে আটক করেছিল সৌদি সরকার।
চলতি বছরের শুরুর দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল নারী অধিকারকর্মী লুজাইন আল-হাতলুলকে। সৌদি আরবের নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়ার পক্ষে আন্দোলন করেছিলেন লুজাইন। দেশটিতে দশকের পর দশক ধরে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু নারীর অধিকার নিয়ে সোচ্চার লুজাইনের আন্দোলন বিফলে যায়নি। ২০১৮ সালে সৌদি আরবের নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার মেলে।