বাংলাদেশি ব্রিটিশ পরিবার ‘নিখোঁজ’ দেড় মাস
নিখোঁজ হয়েছেন দেড় মাস আগে। কিন্তু এখনো সন্ধান মেলেনি তুরস্ক থেকে নিখোঁজ হওয়া একটি ব্রিটিশ পরিবারের ১২ সদস্যের। ব্রিটিশ পুলিশের সন্দেহ, বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে ফেরার পথে তুরস্ক হয়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ায় চলে গেছেন তাঁরা।
নিখোঁজ ১২ সদস্যের মধ্যে ৭৫ বছর বয়সী পরিবারপ্রধান বাবা আবদুল মান্নান ও ক্যানসার আক্রান্ত মা মিনারা খাতুন ছাড়াও তাঁদের চার ছেলে—মোহাম্মদ জায়েদ হোসেইন, মোহাম্মদ তৌফিক হোসেইন, আবুল কাশেম শাকের ও মোহাম্মদ সালেহ হোসেইন, এক মেয়ে রাজিয়া খানম এবং দুই পুত্রবধূসহ তিন নাতি-নাতনি রয়েছেন। শিশুদের বয়স ১ থেকে ১১ বছরের মধ্যে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পরিবারটির তিন প্রজন্ম ছুটি কাটাতে গত ১০ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ডশায়ার কাউন্টির লুটন অঞ্চল থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে বাংলাদেশে আসে। পরে মে মাসের মধ্যভাগে পরিবারটি যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ছাড়ে। পথে ফ্লাইট পরিবর্তনের জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিরতি দেওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ হয় পরিবারটি।
এক বিবৃতিতে বেডফোর্ডশায়ার পুলিশ বলেছে, পরিবারটি খুব সম্ভবত সিরিয়া চলে গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার করে কিছু জানা যায়নি। আসলেই তারা সিরিয়া পালিয়ে গেছে কি না, এ বিষয়ে তাদের হাতে এখনো যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ নেই।
পুলিশের ওই বিবৃতিতে পরিবারটির স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিবারটির এই ১২ সদস্য নিখোঁজ হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। এটা তাদের চরিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত।
সে সঙ্গে পরিবারটির কারো খোঁজ পেলে স্বজনদের জানানোর অনুরোধ করা হয় তাঁদের আত্মীয়দের পক্ষ থেকে।
পরিবারটিকে প্রায় ৩০ বছর ধরে চেনে এমন একজন অশোক। তিনি জানান, এ পরিবারে তিনটি প্রজন্মের বাস। পরিবারটির ছেলেরা সবাই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তারা সত্যিই খুব ভালো ছিল।
যুক্তরাজ্যে পরিবারটির এক প্রতিবেশী জানান, পরিবারটি খুবই সাধারণ। তারা আর সবার মতো সাধারণভাবে ধর্ম পালন করত। তারা চরমপন্থী, এটা কখনোই মনে হয়নি। এটা সত্যিই দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত।
এ বিষয়ে সন্ত্রাস প্রতিরোধ বিষয়ক সংগঠনের উপপরিচালক কুলসুম বশির জানান, এ ধরনের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের মুসলিম কমিউনিটির ওপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাদের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই ভয়াবহ। পরিবারটিকে হয়তো মিথ্যা ও প্রলোভন দিয়ে আইএসে যোগ দিতে বাধ্য করেছে। এ ধরনের বিষয় ঠেকাতে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা অবশ্যই আমরা নেব।’