অভিবাসন প্রত্যাশীদের মৃত্যু ঠেকাতে বান কি-মুনের আহ্বান
ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের মৃত্যু ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোকে আরো পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।
সমন্বিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে অভিবাসনের নিরাপদ ব্যবস্থা ও বৈধ উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন বান কি মুন । এ ছাড়া মানব পাচারে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। বিবৃতিতে তিনি অভিবাসন সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ নিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সভার পাশাপাশি একটি বিশেষ বৈঠকের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন।
বান কি মুন এই মৃত্যুর ঘটনাকে ‘ভীতিকর ও হৃদয়বিদারক’ বলে উল্লেখ করে বলেছেন, বেশির ভাগই সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হয়ে বিপজ্জনক পথ দিয়ে যাত্রা করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ অন্য উপায় না পেয়ে দেশ ছাড়ছে। সংঘাতসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই দৃঢ়সংকল্প হতে হবে।’
বান কি মুন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকারকে আশ্রয়ের অনুরোধের ওপর আর্ন্তজাতিক আইন মানতে হবে এবং সংঘাতের কারণে জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে আসা জনগণকে তাদের দেশে জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘অভিবাসী সমস্যা শুধু আন্তর্জাতিক আইনের বিষয় নয়। এটি মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। এটি একটি মানবিক ট্র্যাজেডি। তাই এটি বন্ধে সমন্বিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
গত বুধবার লিবিয়া উপকূলে দুটি নৌযানডুবির ঘটনায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব অভিবাসী লিবিয়ার ত্রিপলির পশ্চিমে জুয়ারা থেকে ইতালির দিকে যাচ্ছিল। অভিবাসীদের বেশির ভাগই সিরিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের। এদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছে। এ ঘটনায় ইতালিতে পুলিশ ১০ সন্দেহভাজন মানবপাচারকারীকে আটক করেছে।
গত বৃহস্পতিবার মধ্য ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ায় একটি ট্রাকের ভেতর থেকে ৭১টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হাঙ্গেরি সীমান্ত থেকে অস্ট্রিয়ার দিকে যাওয়ার পথে মহাসড়কে একটি পরিত্যক্ত ট্রাকে এসব লাশের সন্ধান পাওয়া যায়। নিহতদের শরণার্থী দাবি করছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে হাঙ্গেরির পুলিশ।
চলতি বছর নৌযানে লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাওয়ার পথে দুই হাজারেরও বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।