প্রতি পঙ্গুর জন্য দুই কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ
সৌদি আরবের মক্কার মসজিদ আল হারামে ক্রেন ভাঙার ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে দেবে দেশটির বাদশাহ। সেই সঙ্গে নিহত ১১১ ব্যক্তির পরিবারের দুজন করে সদস্য আগামী বছর দেশটির বাদশাহর মেহমান হিসেবে হজ করার সুযোগ পাবেন। এ ব্যাপারে সৌদি সরকার গত মঙ্গলবার রাজকীয় ফরমান বা আদেশ জারি করে।
সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ তাঁর আদেশে বলেন, দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ১০ লাখ সৌদি রিয়াল বা প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। দুর্ঘটনায় যারা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়েছেন তাঁরাও একই পরিমাণ অর্থ পাবেন। আর অন্য আহত ব্যক্তিরা পাঁচ লাখ রিয়াল বা এক কোটি পাঁচ লাখ ৫২ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পাবেন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে আরব নিউজ এই জানিয়েছে।
এই আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি নিহত ১১১ ব্যক্তির পরিবারের দুজন করে সদস্য আগামী বছর দেশটির বাদশাহর মেহমান হিসেবে হজ করার সুযোগ পাবেন। দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার কারণে এবার যারা হজ করতে পারলেন না তাঁরা আগামী বছর সৌদি বাদশার মেহমান হয়ে হজ করার সুযোগ পাবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।
বাদশাহর আদেশে আরো বলা হয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ভিজিট ভিসা দেবে সৌদি সরকার।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বলা হয়, মক্কায় মসজিদ আল হারামে ভয়াবহ ক্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১০৭ ব্যক্তির প্রত্যেকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৬০ লাখ টাকা করে দেবে বিমা কোম্পানি।
সৌদি আরবের গ্রান্ড কাউন্সিলের আদেশের ভিত্তিতে বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো এই টাকা পরিশোধ করবে। বিমা বিশেষজ্ঞ আদহাম জাদ বলেন, সৌদি আরবে ভ্রমণকারীদের জন্য ন্যূনতম এক লাখ রিয়াল পর্যন্ত বিমা ঝুঁকি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য বড় ধরনের আপৎকালীন তা বাড়ানো হয়।
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ঝড়ো বাতাস ও ধূলিঝড় প্রবাহিত হওয়ার সময় মক্কার পবিত্র মসজিদ আল-হারামের ওপর ভেঙে পড়ে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত একটি বিশালাকৃতির ক্রেন।
এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এসপিএর তথ্য মতে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১ জনে। আহত হয়েছেন ২৩৮ জনের বেশি ব্যক্তি। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশির মৃত্যু এবং ৪০ জন বাংলাদেশি হজযাত্রীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে সরদার আবদুর রব নামের এক ব্যক্তি ছাড়া সবাই চিকিৎসা শেষে হোটেলে ফিরেছেন।