তারেক রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখতেই বিচার শুরু : মির্জা ফখরুল
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখতেই মিথ্যা মামলায় বিচার শুরু করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার (১৯ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৈঠকে তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় আদালতে চার্জ গঠন এবং বিচার শুরু করায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। বিরোধীদলকে নির্মূল করার নীলনকশার অংশ হিসেবে ১/১১ অবৈধ সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার ও ফরমায়েশি রায় দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার হীন চক্রান্ত করে আসছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার বিচারকাজ শুরু করার লক্ষ্য হচ্ছে তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখা। প্রকৃতপক্ষে অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন একটি একদলীয় শাসনব্যবস্থার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। জিয়া পরিবাররই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রকামী বিরোধীদলের প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থনকারীকে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, কারাগারে নির্যাতন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে সারা দেশে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করছে। (তাদের) লক্ষ্য দেশে কর্তৃত্ববাদী একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসীবাদকে চিরস্থায়ী করা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত জনগণ গ্রহণ করবে না। জনগণের ঐক্য ও দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে বাধ্য করতে হবে। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বেগম খালেদা জিয়াসহ বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি, তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানসহ সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার গঠন করাই এই সময়ে সারা দেশের জনগণের দাবি।’
সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণকে এই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
ঢাকা মহানগরে, বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবাধ, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করে বিরোধীদলের প্রতি আঙুল তোলা ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল। অগ্নিকাণ্ডগুলোর প্রতিটাই এই অবৈধ সরকারের ব্যর্থতার কারণে সংঘটিত হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ও সংগঠনগুলোর তদারকির অভাব, সীমাহীন উদাসীনতা এবং দুর্নীতির কারণেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব। বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।