দুই মাস আত্মগোপনে থাকার পর গ্রেপ্তার ধর্ষণ মামলার আসামি
ঢাকার ধামরাই উপজেলায় এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ দুই মাস আত্মগোপনে ছিলেন প্রধান আসামি মো. জনি মিয়া (৩২)। অবশেষে ঢাকার মেরুল বাড্ডা থানাধীন এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গতকাল শনিবার রাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। ধামরাই থানাধীন কাওয়ালিপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মশিউর রহমান বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
আসামি জনি মিয়া গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সিনাবহ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকার ধামরাই উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের চৌহাট গ্রামের একটি বাড়িতে থেকে ডিস লাইনের ব্যবসা করতেন।
এর আগে গত ২ মে ওই তরুণী বাদী হয়ে জনি মিয়া ও তাঁর খালা লুৎফা আক্তারকে আসামি করে ধামরাই থানায় মামলাটি করেছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ডিস লাইনের ব্যবসার সুবাদে জনির সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের কয়েক বছর পর জনি ও তাঁর খালা লুৎফা আক্তার ওই তরুণীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সেই সুবাদে ওই যুবক শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলে তা ওই তরুণী প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু যুবকের খালা বিভিন্ন প্ররোচনা করে ওই তরুণী ও জনিকে এক কক্ষে রেখে বাইরে পাহাড়া দেন। তারপর থেকে চলতে থাকে অবৈধভাবে মেলামেশা।
এক পর্যায়ে ওই তরুণী যখন সন্তানসম্ভবা হন, তখন বিষয়টি জনি ও লুৎফা আক্তারকে জানান। এরপর তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে ধামরাই থানায় বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা করেন ওই তরুণী।
কাওয়ালিপাড়া তদন্তকেন্দ্রের এসআই মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি জনি মিয়া মামলা হওয়ার আগে থেকেই পলাতক ছিলেন। জনিকে গ্রেপ্তার করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। জনির কোনো ছবি ও মোবাইল নম্বর নেই। এমনকি কোনো আত্মীয়ের বাড়িতেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।’
এসআই মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘জনিকে আটক করতে বার বার বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছে। ধর্ষণ মামলা ছাড়াও অপহরণের মামলা রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধারণা করা হচ্ছে, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জনি জড়িত থাকতে পারেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।’
কাওয়ালিপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. রাসেল মোল্লা বলেন, ‘ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি জনি মিয়া মামলার আগে থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও এসআই মশিউর রহমানের পারদর্শিতায় আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।’