নতজানু জাতি তৈরি করতে চায় সরকার : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘এই সরকার একটি নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরির জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা আমাদের শেকড়ে টান দিয়েছে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিয়েছে। কেউ কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমাদের তো আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং পরিচয় আছে। কেনো সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে ভয় কেনো? আজকে শিশুদেরকে ভ্রান্ত ধারণা ও ইতিহাস শিক্ষা দিচ্ছে। আজকে আমাদের পরিচয় ভুলিয়ে দিতে চায়। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে। এটা জাতির অস্তিত্বের লড়াই। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এর বিষয় ছিল ‘অপরিনামদর্শী কারিকুলাম মানহীন পাঠ্যপুস্তক : দেশের ইতিহাস, ঐতিয্য সংস্কৃতি ধব্বংসের নীল নকশা’।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সভায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শাহ শামীম আহমেদ। তাঁরা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ের কার্বন ডাই অক্সাইড ও মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বসহ বেশকিছু বইয়ের ‘ভুল’ এবং ‘অসত্য তথ্য’ তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে যেসব সন্তান যারা প্রাথমিক শিক্ষা নেয়, সেটা তার সারা জীবনের জন্য থেকে যায়। এই শিক্ষাকে পুঁজি করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার মূল। দুর্ভাগ্যবশত এখনও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।’
পাঠ্যপুস্তকে ভুল ভ্রান্তির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার তাদের যা করার করে যাচ্ছেন। আজকে কেউ কথা বলছেন না। সত্যকে সত্য বলতে ভয় কেন? কেন আমাদের শিশুকে মিথ্যা তথ্য জানানো হচ্ছে? কেন রুখে দাঁড়াই না?’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে পাঠ্যপুস্তকে অজস্র ভুলে ভরা ইতিহাস ও তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। আর সেগুলোই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের শেখানো হচ্ছে। যারা কারিকুলাম তৈরি করে, কেউ কিন্তু ভাবে না—ছেলেমেয়েরা কী শিখছে? জাতির মূল জায়গা হলো শিক্ষা। আর সেখানেই হাত দিয়েছে সরকার।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, শিক্ষকনেতা মো. জাকির হোসেন, অধ্যাপক মো. আল আমিন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক মামুনুর রশিদ, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, অধ্যাপক মাসুদুল হাসান, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক শরিফুল করিম, অধ্যাপক শের মাহমুদ, অধ্যাপক ড. তৌফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক আনিসুর রহমান প্রমুখ।