বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের বিশ্লেষণ
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দুই ম্যাচের সিরিজে অংশ নিতে বাংলাদেশ দল এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কা পৌঁছে গেছে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান এই সফরের দলে নেই।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবার টেস্ট দলে জায়গা করে নিয়েছেন শুভাগত হোম। আর লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের দলে রয়েছেন তিনজন নতুন মুখ। বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য এই সিরেজের বিশ্লেষণ করেছে সংবাদ সংস্থা ইউএনবি। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশ টেস্ট স্কোয়াড
শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য গত শুক্রবার ২১ সদস্যের প্রাথমিক টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবারের টেস্ট দলে নির্বাচকরা যুক্ত করেছেন সাতজন পেসার ও চারজন স্পিনার।
আসন্ন টেস্ট দুটিতে অভিষেক হতে যাওয়া তিনজন পেসার হলেন, বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ও ডানহাতি পেসার শহিদুল ইসলাম ও মুকিদুল ইসলাম। এদিকে দীর্ঘ পাঁচ বছর বিরতির পর সাকিবের বদলে দলে জায়গা পেয়েছেন শুভাগত হোম। বাংলাদেশ দলের হয়ে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুভাগত সর্বেশেষ ম্যাচটি খেলেছিলেন।
বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মমিনুল হক। কিন্তু এবারও টেস্ট দলে সুযোগ পাননি দলের পরীক্ষিত ও সিনিয়র খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহ। তবে বরাবরের মতো দলে থাকছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। এবার তাদের একটু অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়েই খেলতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশের ২১ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড
মুমিনুল হক (অধিনায়ক), লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, মোহাম্মদ সাইফ হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, শুভাগত হোম, শহীদুল ইসলাম ও নুরুল হাসান সোহান।
সিরিজ সূচি
২১-২৫ এপ্রিল প্রথম টেস্ট ও ২৯ এপ্রিল থেকে ৩ মে সিরিজের শেষ টেস্টে লঙ্কানদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
শ্রীলঙ্কা সফর
২০১৭ ও ২০২১ সালের দুটি সিরিজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৭ সালের টেস্ট দলটি ছিল তুলনামূলক বেশি অভিজ্ঞ। ওই দলের অধিনায়ক ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও শেষ ম্যাচ জয়ের মাধ্যমে সিরিজটি ড্র করে বাংলাদেশ দল।
এই সিরিজ জয়ের জন্য অধিনায়ক মুমিনুল এবং টিম ম্যানজমেন্টকে গেইম প্ল্যান সাজাতে হবে দলের কথা বিবেচনা করেই।
২০১৭ সালে দলের টপ অর্ডারে ব্যাটিং করেছিল তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস এবং সৌম্য সরকারের মতো ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশ দলের হয়ে সেই সিরিজে ওপেনিং জুটি হিসেবে তামিম ২০৭ ও সৌম্য ১৯৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেছিলেন।
এবার তামিমের সঙ্গে ওপেনিং জুটি হিসেবে নামবেন সাদমান ইসলাম। এবার দলে জায়গা হয়নি সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসের।
এছাড়া এবার মিডল অর্ডারে সাকিবের জায়গায় খেলবেন মোহাম্মদ মিঠুন ও ৬ নাম্বারে ব্যাটিং করবে লিটন দাস (উইকেট রক্ষক)।
শ্রীলঙ্কার স্পিন সহায়ক পিচের কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশ একাদশের হয়ে খেলতে পারেন তিনজন স্পিনার। বাংলাদেশ ২০১৭ সালে তিনজন স্পিনার খেলিয়েই সফলতা পেয়েছিল।
সব বিবেচনায় এবারের দলে যেমন রয়েছে সম্ভাবনাময় নতুন খেলোয়াড় এবং তেমনি রয়েছে দলকে জয় এনে দেওয়ার মতো খেলোয়াড়। শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে জয়ের যথেষ্ট শক্তি ও সামর্থ্য রয়েছে বর্তমান বাংলাদেশ দলের। কিন্তু এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, বর্তমান টেস্ট দলের তুলনায় অভিজ্ঞ ও ভালো ছিল ২০১৭ সালের টেস্ট দল।
সম্ভাব্য একাদশ
তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি ও এবাদত হোসাইন।
ফল
আসন্ন দ্বিপক্ষীয় এই সিরিজে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত বলা যাবে না। অপরদিকে, বর্তমান শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের জয় একেবারেই অসম্ভবও না। পরিসংখ্যান বলে, শ্রীলঙ্কা তাদের সর্বশেষ ১১ ম্যাচে জয় পেয়েছে মাত্র একটি ম্যাচে। আবার গত দুই বছরে বাংলাদেশ আটটি টেস্ট ম্যাচ খেলে মাত্র একটি ম্যাচে জয় পেয়েছে।